ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে | ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ জানুন

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে সে সম্পর্কে কোনো পোস্ট খুজতাছেন চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আজকে আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং আরো জানাবো ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে | ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ জানুন

শীতের তুলনায় বর্ষাকালে এডিস মশার প্রকোপ বেশি দেখা যায়। বতর্মানে প্রায় প্রতিটি মানুষই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই পোস্টে আমরা বাচ্চাদের ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন দেরি না সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়া যাক।

ভূমিকা

বাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকার কারণে এসডি মশার জন্ম নেয়। পরবর্তী সময় এই এডিস মসকির কামড়ে মানুষ ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এসডি মশা যেন জন্মাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।বাড়িতে থাকা অব্যাবহিত ফুলের টপের পানি ও পলিসিনে জমে থাকা পানি বিভিন্ন টায়ারে জমে থাকা পানি ফেলে দিতে হবে।

নতুবা পরবর্তী সময় এ পানি থেকে জন্ম নিবে এসডি মশা। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রায় সবাই এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করলে অল্প কিছুদিনেরর মধ্যে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আমরা এ পোস্টে ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে সে সম্পর্কে পোস্টের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ২০২৪

বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সংখ্যা বাড়ছে। মহা যানজটে ভরপুর ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব ব্যাপক হারে বিস্তৃত হয়েছে। জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে মশার প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে দেখা যাই। গ্রীষ্মও শীতের তুলনায় বর্ষার মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রভাব বৃদ্ধি পায়। ডেঙ্গু মশার কারণে আমাদের দেশে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।

বর্তমানে দিনদিন যেন ডেঙ্গু মশার প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। ছোট থেকে বড় উভয়ে এই রোগে আক্রমণের শিকার হচ্ছে। ঢাকা ছাড়াও বর্তমানে আমাদের দেশের প্রতিটি জেলায় জেলায় এই রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। সাধারণত এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে।

বাসা বাড়ির ফুলের টবে, টায়ারে, বালতি, মগ, ডাবের খোসা ও প্লাস্টিকে পানি জমে থেকে এডিস মশা সৃষ্টি হয়। ভাইরাসজনিত রোগ হলো ডেঙ্গু। এডিস মশা আক্রমণের ফলে ডেঙ্গু জ্বর হয়।ডেঙ্গু জ্বর হলে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায় আজকে আমরা সে লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানব।

  • ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে মাথাব্যথা সৃষ্টি হয়।
  • ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে ত্বকে ফুসকুরি হতে থাকে ।
  • ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যায়।
  • ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে বমি বমি ভাব সৃষ্টি হয়।
  • ১০১ থেকে ১০৪ডিগ্রি পর্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর আসে।
  • চোখের নিচে কালো দাগ সৃষ্টি হয়।
  • চোখের পেছন সাইডে ব্যথা সৃষ্টি হয়।
  • ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত হলে পেটে ব্যথা সৃষ্টি হয়।
  • দ্রুত ডিপ্রেশনে চলে যায় ও ঘামতে থাকে।
  • অনেক সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের পেট ফুলে যায়।

শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

বড়দের তুলনায় ছোটদের ডেঙ্গু জ্বর কম হলেও। বর্ষায় আনাচে-কানাচে পানি জমে থাকার কারণে বাচ্চারাও ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত হয়। বাচ্চাদের এডিস মসকির কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। বাচ্চা যখনই জ্বর আসবে তখনই ডক্টরের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার।না হলে অনেক সময় বোঝা যায় না যে এটা এমনি জ্বর না ডেঙ্গু জ্বর।

ডেঙ্গু জ্বর হলে বাচ্চার গায়ে ফুসকুড়ি সৃষ্টি হয়। পেট ব্যথা করে এবং সব সময় কান্না করতে থাকে। পাতলা পায়খানা হয় ও বমি বমি ভাব সৃষ্টি হয়। এই লক্ষণ গুলো দেখলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়া উচিত। শিশুকে ডেঙ্গু জ্বরের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সব সময় মশারির টাঙিয়ে রাখা দরকার।

বাড়ি আশেপাশে যেন কোন জায়গায় পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সব সময় আনাচে-কানাচে পরিষ্কার রাখতে হবে। বাচ্চাকে ফুল শার্ট ও ফুল প্যান্ট পরিধান করিয়া সবসময় রাখতে হবে। এর দিকগুলো খেয়াল রাখলে বাচ্চাকে এই রোগ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ

বর্তমানে অনেকেই মনে করে ডেঙ্গু ছোঁয়াচে রোগ আসলে কিন্তু ডেঙ্গু রোগ ছোঁয়াচে নয়। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। প্লাস্টিক মগ, বালতি, ডাবের খোসা ও বিভিন্ন স্থানের জমে থাকা পানি থেকে এডিস মশার জন্ম। এডিস মসকির কামড়ে মাধ্যমে মানবদেহে ভাইরাসে প্রবেশে করে যার ফলে ডেঙ্গু জ্বর সৃষ্টি হয়ে থাকে।

ঢাকা শহরে বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকার কারণে এই মশার সৃষ্টি হয়। এই মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবসময় কয়েল ও মশারি টাঙিয়ে রাখা হয়। তাই বলা যায় ডেঙ্গু জ্বর কোন ছোঁয়াচে রোগ নয় বরং এটি এডিস মশকীর কামড় থেকে হয়ে থাকে।

ডেঙ্গু হলে কি খাবার খাওয়া যাবে না

বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে দেখা যায়। ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্ত হওয়ার প্রথমে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ঔষধ নেওয়া প্রয়োজন।ডাক্তারের পর ওষুধের পাশাপাশি কিছু খাবার খেলে ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের শরীর সুস্থ হতে সাহায্য করে। কিন্তু ডেঙ্গু জ্বর রোগীদের জন্য কিছু খাবার পরিত্যাগ করা হয়েছে।যেগুলো খেলে অনেক সময় বিপদের সম্মুখীন হতে পারি।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চা ,কফি খাওয়া যাবেনা। দুধ ও প্যাকেটের জুস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বন্ধুরা এই সকল খাবারগুলো ডেঙ্গু ও রোগীদের খাওয়া যাবেনা। উপরে বিষয়গুলো মাথায় রেখে ডেঙ্গু রোগীদের খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে

ডেঙ্গু জ্বরে এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরের কিছু লক্ষণ দেখা যায় যে গুলো দেখলে আমরা বুঝতে পারবো যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে নাকি সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০১ থেকে ১০৪ ডিগ্রি হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা না হওয়ার কারণে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

এই রোগ থেকে মুক্তি পাবার জন্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে যেমন ডালিম, পেঁপে ,তরল পদার্থ ইত্যাদি। এডিস মশা কামড়ের ফলে ডেঙ্গু জ্বর সৃষ্টি হয়ে থাকে। অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়ালে ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে

এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু জ্বর সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে মানুষের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়।এডিস মসকির কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর সৃষ্টি হয়ে থাকে। তিন থেকে পনেরো দিনের মাঝে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে।প্রায় চার প্রজাতির এডিস মসকি আছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং অনেক রোগী আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাই এই সব রোগীদের সুস্থ করার জন্য ডক্টরের ওষুধের পাশাপাশি কিছু পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে যাতে তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা ফিরে পাই। আজকে আমরা এডিসের আক্রান্ত হলে যেসব খাবার খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানব।

তরল খাদ্যঃ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর দেহে পানি পরিমাণ কমে যায় আর এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তরল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। যেমন ফলের জুস ও স্যুপ ডাবের পানিইত্যাদি।

ডালিমঃ ডালিমে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি সমৃদ্ধ থাকে। ডালিমের মিনারের পাশাপাশি ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। সচল রাখতে সাহায্য করে তাই ডেঙ্গু রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে ডালিম খাওয়া প্রয়োজন।
হলুদঃ জ্বর সারতে হলুদ বেশ কার্যকর।দুধের সাথে হলুদ মিশে পান করলে দ্রুত জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।তাই প্রত্যেকটি মানুষেরই হলুদ খাওয়া প্রয়োজন।

কমলাঃ কমলা লেবুতে ভিটামিন সি আছে যা আমাদের শরীরের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত অবস্থায় কমলা লেবু খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

মেথিঃ মেথি ডেঙ্গু জ্বর সারতে সাহায্য করে। পরিপূর্ণ ঘুম হতেও মেথির ভূমিকা অতুলনীয়।ডক্টরে পরামর্শ অনুযায়ী মেথি খাওয়ার প্রয়োজন।

পালং শাকঃ আয়রনে পরিপূর্ণ থাকে পালং শাক। তাই পালং শাক খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের পালং শাক খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

অবশেষে বলা যায়

ডেঙ্গুর রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রথমে আনাচে-কানাচে যেন পানি না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।ডেঙ্গু জ্বর হলে ডাক্তার পরামর্শ অনুযায় ওষুধ খাওয়ার সাথে সাথে ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে সেগুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা প্রয়োজন।

প্রিয় বন্ধুরা আমাদের ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে নিয়ে লেখা পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে।যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট পাওয়া পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন