সামনের দাঁত নিচু করার উপায় এবং দাঁত ফাঁকা দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ আমাদের মুখের সৌন্দর্যের একটি মূল বিষয়বস্তু হলো দাঁত। দাঁত সুন্দর না হলে সে যত বড় সুন্দর হোক না কেন তার চেহারার মধ্যে সেটা ফুটে ওঠে না। সুস্থ সুন্দর দাঁত মুখের সৌন্দর্যের প্রতীক। সামাজিক জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে যোগ্যতার পাশাপাশি যে কোন মানুষের সৌন্দর্য অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ।

সামনের দাঁত নিচু করার উপায় এবং দাঁত ফাঁকা দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

আর এই সৌন্দর্যকে ব্যাহত করতেছে তার সামনের উঁচু ও ফাঁকা দাঁত। আমাদের দেশে এই সমস্যায় ভোগেন অনেকেই এটা সঠিক চিকিৎসা বা সমাধান না জানার ফলে। তাই আজকে আমি জানাবো সামনের দাঁত নিচু করার উপায়। দাঁতের ফাঁকা দূর করার উপায়।

সামনের দাঁত উঁচু হয়ে যায় কেন

অনেকেরই মুখের গঠনগত কারণে সামনের দাঁত উঁচু হয়। দাঁতের চোয়াল বড় বা কারো চোয়াল ছোট হয়ে থাকে। চোয়ালের তুলনায় দাঁত যদি ছোট অথবা বড় হয়ে থাকে তবে সামনের দাঁত উঁচু  হতে পারে।

তবে বিশেষ কিছু অভ্যাসের কারণে সামনে দাঁত উঁচু হয়ে থাকে। দেখা যায় অনেক শিশু ছোটবেলায় আঙ্গুল চোষে। আঙুল চোষার ফলে সামনে দাঁত উঁচু হয়ে যায়। এটি একটি বিশেষ কারণ সামনের দাঁত উঁচু হওয়ার।

আবার অনেক শিশু খেতে চায় না এক্ষেত্রে মা বা অভিভাবকগণ তাদের চামচ দিয়ে জোর করে খাওয়ায়। এর ফলে দাঁতের চোয়াল এগিয়ে আসে। এটাও একটি বিশেষ কারণ সামনে দাঁত উঁচু হওয়ার।

জিনগত কারণেও অনেকের দাঁত উঁচু হয়ে থাকে। দুধের দাঁত সঠিক সময়ের আগে বা সঠিক সময়ের পরে উঠলেও সামনের দাঁত উঁচু হতে পারে। 

অনেকেরই নাকের হাড় বা মাংসের সমস্যা থাকে যে কারণে তারা মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেয়। এর ফলেও সামনের দাঁত উঁচু হয়ে যায়।

আবার আঘাত জনিত কারণেও সামনের দাঁত উঁচু হতে পারে। আরও বিভিন্ন কারণ রয়েছে সামনের দাঁত উঁচু হয়ে থাকে।

সামনের দাঁত নিচু করার উপায়

সামনের দাঁত নিচু করার সবচেয়ে ভালো ও নিরাপদ উপায় হল ব্রেস লাগানো। এর মাধ্যমে যাদের দাঁতের চোয়ালের হার বা দাঁত যদি উঁচু থাকে যে কোন সমস্যায় কার্যকরী ও নিরাপদ সমাধান ব্রেস লাগানো।

এছাড়াও ক্যাপ লাগিয়ে দাঁত নিচু করা যায়। রিমোভ্যাল অ্যাপ্লায়েন্স দিয়ে খুব কম খরচ করেও সামনের দাঁত নিচু করা যায়। এক্ষেত্রে যাদের চোয়াল উঁচু না শুধু দাঁত উঁচু তাদের ক্ষেত্রে কার্যকারি  চিকিৎসা এটি।

দাঁত উঁচু-নিচু হলে যেসব সমস্যা হয়

দাঁত উঁচু নিচু হলে মানুষকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। খেতে সমস্যা হয়, হাসতে সমস্যা হয়,কথা বলতে সমস্যা হয়। যে কোন মানুষের কথা বলার কনফিডেন্স কমে যায়। মন খুলে হাসতে ভয় পায়। এগুলো খুব জটিল সমস্যা দাঁত উঁচু-নিচু হওয়ার।


সামনের দাঁত নিচু করার ঘরোয়া উপায়

সামনের দাঁত নিচু করার ঘরোয়া একটি উপায় হল প্রতিদিন নিয়মিত এক থেকে চার মিনিট সামনের দাঁত আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরা। এভাবে সারাদিনে তিন হতে চার বার করা। এ পদ্ধতি শিশুদের ক্ষেত্রে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ তাদের দাঁতের চোয়াল অনেক নরম থাকে। তবে যাদের বয়স ৪০ পার হয়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে না।

দাঁত ফাঁকা দূর করার ঘরোয়া উপায়

দাঁত ফাঁকা দূর করার ঘরোয়া উপায় হল আঙ্গুল দিয়ে ফাঁকা দাঁতগুলো এক থেকে চার মিনিট ধরে 2 আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে রাখা। এভাবে এক হতে দেড় মাস করলে দাঁতের ফাঁকা কিছুটা কমতে পারে।

রাবার ব্যান্ড ব্যবহার করেও ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁতের ফাঁকা দূর করা সম্ভব। এক্ষেত্রে যাদের দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে বা দাঁত নড়ে বা দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে দাঁতের কঠিন সমস্যাও হতে পারে। ঘরোয়া সেরকম সঠিক পদ্ধতি নেই দাঁত ফাঁকা দূর করার। দাঁত ফাঁকা দূর করতে হলে আমাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বড় দাঁত ছোট করার উপায়

বড় দাঁত ছোট করার একমাত্র উপায় হল কাটিং করা। তবে দাঁত কাটার পূর্বে আগে আমাদের জানতে হবে দাঁত সম্পর্কে। দাঁতের সাধারণত তিনটি  লেয়ার থাকে। প্রথম যে লেয়ার থাকে তাকে বলা হয় এনামেল। তারপর রয়েছে ডেন্টিন। এরপর রয়েছে প্লাব। এই তিনটি লেয়ার দ্বারা একটি দাঁত গঠিত হয়।

যদি দাঁত কাটতেই হয় তাহলে এনামেল অংশ থেকে একটু কাটা যাবে এক্ষেত্রে সেরকম কোন সমস্যা হবে না। এভাবেই বড় দাঁত ছোট করা হয়।

দাঁত কেটে ছোট করার উপায়

দাঁত কেটে ছোট করার পূর্বে অবশ্যই একজন দাঁত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আপনার দাঁত যদি পাশের দাঁতের থেকে শুধু লম্বায় একটু বড় হয় তাহলে আপনি দাঁত কাটতে পারবেন।

আবার যদি দাঁতটি লম্বা ও চড়াও অনেক বেশি হয় পাশের দাঁতের তুলনায় তাহলে পাশের দাতের সঙ্গে তা কেটে সমান করা যাবে না। হালকা একটু হালকা একটু এনামেলের অংশটুকু কাটা যেতে পারে। তবে পুরোপুরি পাশের দাঁতের সমান হবে না। যদি পাশে দাঁতের সমান করার মতো কাটা হয় তাহলে দাঁতের জটিল সমস্যা হতে পারে।

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায় যে, সচেতনতার মাধ্যমে আমরা তার উঁচু ও ফাঁকা হওয়া থেকে রোধ করতে পারি। সুস্থ সুন্দর দাঁত প্রত্যেক মানুষেরই প্রাপ্য। যা তাকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সুন্দরভাবে বাঁচতে সহায়তা করবে। সুস্থ ও সুন্দর দাঁত ব্যক্তিত্বকে করবে উজ্জ্বল। তাই আজকে থেকেই সবাই সচেতন হয়ে দাঁতের প্রতি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন