ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ ও ভিটামিন ডি এর উৎস সম্পর্কে জানুন

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন কিন্তু পাচ্ছেন না চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আজকে আমরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং আরো জানবো ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে।তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে সম্পূর্ণ বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ ও ভিটামিন ডি এর উৎস সম্পর্কে জানুন

মানব দেহ সুস্থ রাখতে ভিটামিন ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ভিটামিন ডি এর অভাবে মানব দেহের হার বাঁকা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। আমরা এই পোস্টে ভিটামিন ডি এর কাজ কি? এই সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়া যাক।

ভূমিকা

মানব দেহের জন্য অন্যান্য ভিটামিনের পাশাপাশি ভিটামিন ডি এর গুরুত্ব অনেক। ভিটামিন ডি এর পূরণের প্রধান উৎস হলো সূর্য। সূর্যে অতি থেকে আসা আলো আমাদের দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করতে কার্যকর। ভিটামিন ডি এর অভাবে ক্ষত শুকাতে দেরি হয়, দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়, ক্ষুধামন্দা সৃষ্টি হয় ও অতিরিক্ত চুল পড়তে থাকে ইত্যাদি।

এ সকল কিছু থেকে রেহায় পাবার জন্য ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন অনেক।আমরা এই পোস্টটে জানবো ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়,ভিটামিন ডি ট্যাবলেট এর নাম,ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ,ভিটামিন ডি এর কাজ কি? সম্পর্কে।তাহলে চলুন দেরি না করে সম্পূন পোস্টটি মনোযোগ সহকারে আলোচনা করা যাক।

ভিটামিন ডি এর কাজ কি?

ভিটামিন ডি এর কাজ হলো দেহকে রোগ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত রাখা। আমরা সূর্যের আলো ও চর্বিযুক্ত খাবার থেকে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করতে পারি। পোস্টের এই অংশে আমরা ভিটামিন ডি এর কাজ গুলো সম্পর্কে জানব।

  • ক্যান্সার নিরাময়ের সহায়তা করে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে।
  • শরীরের জন্য খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
  • ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি দেয়।
  • রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • দৃষ্টিশক্তি প্রখরও হয় এবং কার্যকারিতা ঠিক থাকে।
  • রক্তের শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ

আমাদের দেহে ভিটামিনের অভাব হলে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যা দেখে আমরা বুঝতে পারবো যে আমাদের দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব রয়েছে। ভিটামিন ডি এর দূর করার জন্য সূর্যের আলো গায়ে নিয়মিত লাগাতে হবে ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। তাহলে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হবে।চলুন তাহলে আমরা পোস্টের এই অংশে ভিটামিন ডি এর হলে যে লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়াঃ আমাদের শরীরের কোনো স্থানে যদি ক্ষত সৃষ্টি হয়। সে ক্ষত দ্রুত শুকাতে ভিটামিন ডি সাহায্য করে। যদি দেখা যায় ক্ষত শুকাতে দেরি হচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে যে দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব রয়েছে।

হাড়ের ক্ষয়ঃ আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম এর যোগান দেয় ভিটামিন ডি আর ভিটামিন ডি বা ক্যালসিয়ামের অভাব হলে হাড়ের ক্ষয় হয়। তাই ভিটামিন ডি এর অভাব হলে হার ক্ষয় হয়ে থাকে।

দ্রুত ওজন বৃদ্ধিঃ মানুষের দেহে যদি ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দেয়। তাহলে শরীরের ওজন দ্রুত বাড়তে থাকে। তাই দ্রুত ওজন বৃদ্ধি হতে থাকলে বুঝে নিতে হবে যে আপনি ভিটামিন ডি এর অভাবে ভুগছেন।

পিঠে ব্যথাঃ বর্তমানে ছোট-বড় সবারই কিছুক্ষণ একলাগারে বসে থাকলেই পিঠে ব্যথা সৃষ্টি হয়। এটি এমনিও হতে পারে আবার ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কারণে অনেক সময় পিঠে ব্যথা অনুভব করা যায়।

চুল পড়াঃ বর্তমানে মেয়েদের চুল পড়া একটা সাধারণ প্রবলেম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূর্যের আলো ভিটামিন ডি জোগাতে সাহায্য করে। যদি কেউ দেখে তার অতিরিক্ত চুল পড়ছে তাহলে বুঝে নিতে হবে দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব সৃষ্টি হয়েছে।

ক্লান্তিঃ ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরের ভিতরে দ্রুত ক্লান্তির ভাব চলে আসে। তাই বলা যায় অতিরিক্ত ক্লান্তির ভাব আসলে ভিটামিন ডি এর অভাব হিসেবে ধরা হয়।

মেজাজ খিটখিটে থাকাঃ ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে অনেক সময় মেজাজ দ্রুত গরম হয়ে যাই। তাই মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেলে বুঝে নিতে হবে ভিটামিন ডি এর অভাবে হয়তো ভুগছেন।

ক্ষুধামন্দাঃ যদি দেখেন আপনার প্রচুর পরিমাণে ক্ষুধা লাগা সত্ত্বেও খেতে ভালো লাগছে না। তাহলে বুঝে নিতে হবে যে আপনি হয়তো ভিটামিন ডি এর অভাবে ভুগছেন।

ভিটামিন ডি এর উৎস

মানব জীবনে ব্যাপক হারে ভিটামিন ডি এর গুরুত্ব রয়েছে।ভিটামিন ডি আমাদের দেহে হাড়কে মজবুত রাখতে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হলো সূর্য। আমরা সূর্য থেকে ৭০% ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি। আর বাকি ৩০ ভাগ অন্যান্য খাদ্য থেকে পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি আমাদের দেহে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করে। আজকে আমরা ভিটামিন ডি সংশ্লিষ্ট কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জানব।

সূর্যঃ ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হলো সূর্য। আমরা সূর্যের অতি তীক্ষ্ণরশ্মি থেকে ভিটামিন ডি এর ৭০% পেয়ে থাকি। তাই বলা যায় ভিটামিন ডি এর জন্য নিয়মিত গায়ে রোদ লাগার প্রয়োজন।

ডিমঃ ডিম দাম কম হওয়ায় প্রায় প্রতিটি মানুষ ডিম খেয়ে থাকে। আসলে ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। তাই ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণের ডিমের কুসুম খাওয়া ভালো। ডিমের কুসুম খেলে আমার দেহে ভিটামিন ডি এর ঘাটতির অভাব পূরণ করতে দ্রুত সাহায্য করে। ডিমের কুশন ভিটামিন ডি এর ঘাটতির পাশাপাশি দাঁত মজবুত রাখতে বেশ কার্যকর।

মাশরুমঃ উদ্ভিদের মধ্যে আমরা মাশরুম থেকে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণের সহায়তা করে।তাই আমাদের দেহের ভিটামিন ডি এর অভাব পূরনে মাশরুম খাওয়া প্রয়োজন।

দুধঃ ভিটামিন ডি এর অভাব আরাকটা পূরণের মাধ্যম দুধ গ্রহণ করা। নিয়মিত খাদ্য তালিকা দুধ গ্রহণ করার ফলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হয়।

কমলার রসঃ ভিটামিন ডি এর অভাব পূরনের জন্য কমলার রস খাওয়া প্রয়োজন। অন্যান্য উপাদানের সাথে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ জন্য কমলার রস খাওয়া প্রয়োজন।

দইঃ দই প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় যা আমাদের হারকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তা ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণের জন্য দই খাওয়া প্রয়োজন। দই হজমশক্তি বৃদ্ধি করতেও বেশ কার্যকর।

বাদামঃ অনেকেই বাদাম খেতে ভালোবাসে। নিয়মিত যদি বাদাম খাওয়া যায় তাহলে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ হওয়া সম্ভব। বলা যায় ভিটামিন ডি এর একটি উৎস বাদাম।

দুগ্ধজাত খাবারঃ দুধের তৈরি খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ডি থাকে। যেমন ছানা, মাখন, পনির ইত্যাদি। এই সকল খাদ্যগুলো খাওয়ার ফলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হয়। তাই ভিটামিন ডি এর অভাব পূরনের জন্য প্রত্যেকের চেষ্টা করা উচিত এই সকল খাবার খাওয়া।

চর্বিযুক্ত মাছঃ সামুদ্রিক কিছু মাছেরর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এ সকল মাছ খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে ভিটামিন ডি এর খাটতি পূরণ করা সম্ভব।

ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়

মানবদেহে ভিটামিনের গুরুত্ব অনেক। বর্তমানে অনেকেরই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সাধারণত বাচ্চাদের গর্ভবতী মায়েদের ও বৃদ্ধ মানুষের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি বেশি পরিমাণে দেখা যায়। ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হলো সূর্য। সূর্য থেকে আমরা প্রায় ৭০% ভিটামিন ডি সংগ্রহ করি। আর বাকি ৩০% অন্যান্য সব খাদ্য থেকে পেয়ে থাকি।

বর্তমানে খাদ্যের ভেতরে ভেজাল থাকার কারণে সঠিকভাবে আমরা ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করতে পারছি না। বর্তমানে প্রায় অনেকেরই ভিটামিন ডি এর প্রবলেম দেখা দিচ্ছে। আমাদের দেহে ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড় ক্ষয় হতে থাকে। ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দিন দিন কমতে থাকে।

বাচ্চাদের ভিটামিন ডি এর অভাব হয় কারণ বাচ্চারা ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে চায়না। যেমন শাক-সবজি ও দুধ। তাই বাচ্চাকে গোসল করিয়ে রোদে রাখার পাশাপাশি শাকসবজি দুধ ও ডিম ও অন্যান্য ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। তাহলে বাচ্চাদেরকে ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কোন সমস্যা দেখা দিবে না।

গর্ভবতী ও বয়স্ক মানুষদের কেউ সকাল বা ১১ থেকে ১২টার সময় গোসল করে কিছুক্ষণ রোদে বসে থাকা দরকার।রোদে বসে থাকলে সূর্যের থেকে ভিটামিন ডি সংগ্রহ করা যায়। এর পাশাপাশি শাকসবজি দুধ, ডিম ও অন্যান্য খাবার খেলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করা সম্ভব হবে। তাই প্রত্যেকের চেষ্টা করতে হবে রোদে বসে থাকা এবং ভিটামিন বি যুক্ত খাবার গ্রহণ করা।

ভিটামিন ডি ট্যাবলেট এর নাম

ভিটামিন ডি প্রতিটি মানব দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ভিটামিন ডি এর অভাবে পূরনের জন্য সূর্যের তীক্ষ্ণ আলো ও বিভিন্ন ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেয়ে থাকি। এসব খাওয়ার পাশাপাশি ভিটামিন ডি জন্য কিছু ঔষধ খাওয়া হয়।যেগুলো খেলে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তবে ভিটামিন ডি ঔষধ খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।

  • Osteo -D Dispersible Tablet
  • D-gain Capsule
  • D-Shine Capsul
  • D-Best Capsule
  • Colecalciferol
  • D-1000 Tablet
  • D-Cap Capsule
  • D-Revive
  • D-Star Capsule
  • Aristo D3 Capsule

ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়

বর্তমানে অনেক মানুষেরই ভিটামিন ডি এর অভাবে ভুগছে কিন্তু বুঝতে পারেনা। সঠিকভাবে চিকিৎসা করতে গেলে বোঝা যাবে যে ভিটামিন ডি এর অভাবে ভুগছে। ভিটামিন ডি মানব দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কমে গেলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দিন দিন হ্রাস পায়। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে অনেক সময় হাড়গোড় ব্যাঁকা হয়ে যায় বা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। অনেকের মনে জানার আকাঙ্ক্ষা থাকে ভিটামিন অভাব কেন হয়। মূলত সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকা ওআমিষ জাতীয় খাবার না খাওয়ার কারণে অনেক সময় ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয়। ছোট বাচ্চারা অনেক সময় দুধ ডিম ও শাকসবজি খেতে চাই না।

এর ফলে তাদের ভিটামিনের ঘাটতি দেখাতে পারে। বাচ্চাদের ও সবারই ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত। ভিটামিন ডি এর কারণে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাদেখা দেয়। তাই সবাই চেষ্টা করবেন ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়ার।

অবশেষে বলা যায়

বর্তমানে প্রতিটি মানুষের ভিটামিন ডি এর অভাব ভুগছে। ভিটামিন ডি হারকে শক্তিশালী ও মজবুত রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আমাদের অনেকেই ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজি ও চর্বি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে অপছন্দ করি। তবে ভিটামিন ডি এর পূরন করার জন্য সামান্য পরিমাণের হলেও এগুলো গ্রহণ করা উচিত।

আমাদের এই পোস্টে ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়,ভিটামিন ডি ট্যাবলেট এর নাম,ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয় কি?,ভিটামিন ডি এর উৎস,ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ ওভিটামিন ডি এর কাজ কি? নিয়ে সম্পূর্ণ আলোচনা করেছি। প্রিয় বন্ধুরা আমাদের এ পোষ্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট পাওয়া পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন