লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন

লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নিশ্চয় আপনি জানতে চান? এই সম্পর্কে যাদের জানা প্রয়োজন সুধু তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি। এই আর্টিকেলে সুন্দর করে আলোচনা করা হয়েছে লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টি গুণাগুন গুলো। আপনারা আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন তাহলে বুঝতে পারবেন।

লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন

আমাদের অনেকের জানা নেই পালং শাকে কি এলার্জি আছে। পালং শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি গুন থাকার কারণে সকল মানুষ খেতে বেশি পছন্দ করে কিন্তু অন্যদিকে এলার্জি হয়। কেন এলার্জি হয় এইগুলো অবশ্যই জানা আপনার জানার প্রয়োজন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক পালং শাকের এলার্জি কারণগুলো।

ভূমিকা

লাল শাক যেমন পুষ্টিগুণ খাবার অন্যদিকে পালং শাকও কিন্তু অনেক পুষ্টিগুণ খাবার। আমাদের সকলের জানা প্রয়োজন যে লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। আমরা এই আর্টিকেলে এইগুলো বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের লাল শাক ও পালং শাকের মধ্যে যেগুলো পুষ্টি গুণ রয়েছে সেগুলোও তুলে ধরেছি এবং আরো অন্যান্য যেগুলো বিষয় রয়েছে সমস্ত কিছু তুলে ধরেছি এই আর্টিকেলের মধ্যে। আপনারা ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়লে সমস্ত কিছু বুঝতে পারবেন। 

পালং শাকে কি এলার্জি আছে?

আজকে আমরা পালং শাকে কি এলার্জি আছে এই বিষয় নিয়ে কথা বলবো- পালং শাক খেলে কিছু কিছু মানুষের এলার্জি সমস্যা হয়ে থাকে। পালং শাকে অনেক পরিমান প্রোটিন আছে যা পরাগের মধ্যে পাওয়া যায়। যাদের পরাগের মধ্যে থেকে এলার্জি সৃষ্টি হয় তাদের জন্য এই সমস্যা হতে পারে। পালং শাক খাওয়ার ফলে যে এলার্জি সৃষ্টি হয় সেটি হচ্ছে গলা চুলকায়, নাক চুলকায়, ফুসফুসের সমস্যা হয়, চোখ চুলকানি, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, এগুলো ইত্যাদি এলার্জির ফলে হতে পারে। 

সেজন্যে যাদের পালং শাকে এলার্জি আছে তাদের না খাওয়াটাই উত্তম। পালং শাকের মধ্যে রয়েছে অক্সালিক অ্যাসিড এই উপাদানটি আমাদের শরীরে যদি বেশি পরিমাণ সঞ্চিত হয় তাহলে আমাদের শরীরের খনিজ পদার্থ শোষণের মাত্রা অনেক কমিয়ে যায়। ফলে শরীরের খনিজ পদার্থ গুলো অনেক বেশি ঘাটতি দেখা যেতে পারে।

পালং শাকে এলার্জি আছে কিন্তু সবার ক্ষেত্রে এই এলার্জি কোন কাজ হবে না। এটা যাদের অ্যালার্জি আছে শুধু তাদের সমস্যা হতে পারে। যদি আপনি পালং শাক খাওয়ার পর এলার্জির কোন লক্ষণ বুঝতে পারেন তাহলে বুঝবেন যে পালং শাক খেয়েই এলার্জি হয়েছে। আমরা নিচে আরো জানবো যে লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

অতিরিক্ত পালংশাক খেলে কী হয়

কোন জিনিসই অতিরিক্ত খাওয়া সঠিক নয় কারণ অতিরিক্ত জিনিস খেলে শরীরের ক্ষতি হবে এইটা স্বাভাবিক সব কিছুরই ভালো-মন্দ অবশ্যই আছে ঠিক তেমনি পালং শাক পালং শাক অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। পালং শাক যেভাবে কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়।

পালং শাকের মধ্যে অক্সালেট থাকে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে অক্সালেটের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে পাথরগুলো তৈরি হয়। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে অতিরিক্ত যেন পালং শাক না খাওয়া হয়।

১০০ গ্রাম পালং শাকের মধ্যে ৯৭০ মিলিগ্রাম অক্সালেট থাকে। অক্সালেটের ঘনত্ব কিছুটা কমাতে পারে ফুটন্ত পালং শাক। এই স্বাদের সাথে যদি আমরা ক্যালসিয়াম ভিত্তিক কোন খাবার যেমন,দই মিশ্রণ করি তাহলে আমাদের শরীরের কিডনির যে পাথর গঠন এটা প্রতিরোধ করতে পারবে।

যদিও প্রতিটি ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা সবার মত হয় না সেজন্য সবার এরকম হবে না তবে কোন কিছুই অতিরিক্ত করা ভালো না।

যদি আপনার কিডনির সমস্যা থাকে তাহলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর পালং শাক খাবেন তাহলে আপনার কোন সমস্যা হবে না।

পুষ্টির ঘাটতি অক্সালিক এসিড পালং শাকের মধ্যে রয়েছে যার জন্য উদ্ভিদে প্রাকৃতিক ভাবে ঘটে যাওয়া পরিমাণ যদি স্বাভাবিক মাত্রায় ছড়িয়ে গেলে তার শরীরে অন্যান্য খনিজ শোষণ ক্ষমতাকে অনেক বেশি প্রভাবিত শুরু করে ফলে অক্সালিক এসিড ম্যাগনেসিয়াম এগুলো সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে খনিজ ঘাটতি হতে পারে।

বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া যদি খুব বেশি পালন শাক অতিরিক্ত মাত্রায় খেয়ে ফেলি তাহলে বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

পেটের সমস্যা আমরা যদি অতিরিক্ত পালং শাক খেয়ে ফেলি তাহলে আমাদের গ্যাস হতে পারে। তখন পেট ফোলা ফোলা ভাব দেখা দিবে এইসব উচ্চ বা সামগ্রীর কারণে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রক্ত পাতলা কারী ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে রয়েছে যার ফলে রক্তপাতলাকারী ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে। স্টোক প্রতিরোধে এই ওষুধ রক্ত পাতলা কারী রোগীদের দেওয়া হয়। তাই এইরকম রোগীদের জন্য পালং শাক খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। রান্না করা পালং শাকে যদি আমরা আধা কাপ পালং শাক নিই সেখানে ৪৪৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন কে থাকে । 

আর যদি কাঁচা পালন শাক নিই সেখানে রান্না করার তুলনায় অনেক কম মিলিগ্রাম পুষ্টি থাকে। সেজন্য রান্না করা পালংশাকে ভিটামিন কে মাত্রা অনেক বেশি থাকার কারণ হচ্ছে পুষ্টি শোষণ বেশি বাড়ায়। ভিটামিন কে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান।

আমাদের শরীরের ক্যান্সার, হৃৎ রোগ, এগুলো প্রতিরোধে ভিটামিন কে এর ভূমিকা রয়েছে অনেক বেশি। পালং শাক কারো কারো ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় কিন্তু পালং শাক স্বাস্থ্যের জন্য একটি উপকারী খাদ্য তবে আমরা যে কোন খাবার খেলে নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। অতিরিক্ত পালংশাক খেলে কী হয় সেগুলো সঠিক বিষয় গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি। 

লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন

লাল শাক অনেক ভিটামিনযুক্ত একটি খাদ্য। লাল শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি যার কারণে ছোট বাচ্চা থেকে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের এই লাল শাক খাওয়ানো হয়। লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা অনেকে হয়তো জানি আবার অনেকেই জানিনা চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

লাল শাক যেমন আমাদের পুষ্টি যোগায় অপরদিকে পালং শাক ও আমাদের পুষ্টি যোগায়। লাল শাক অথবা পালং শাক আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে। লাল শাক অথবা পালং শাকে নানা ধরনের পুষ্টি রয়েছে যা শরীরের রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 

লাল শাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

অনেক মানুষ মনে করে যে রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য লাল শাক বেশি বেশি খাওয়া দরকার। কিন্তু ধারণাটি ভুল নয়। তবে শুধু যে রক্তশূন্যতার জন্য লাল শাক প্রয়োজন তা নয়। এই শাকে অনেক পরিমাণ খনিজ উপাদান রয়েছে যা শিশুদের শারীরিক বিকাশের জন্য খুব বিশেষ উপযোগী এই লাল শাক। লাল শাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অনেক বেশী। লাল শাকে রয়েছে অনেক পরিমান ভিটামিন।

লাল শাক যদি নিয়মিত খান তাহলে আপনার দৃষ্টিশক্তি খুব ভালো থাকবে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে। ভিটামিন সি অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। লাল শাকের মধ্যে থাকা আশ জাতীয় অংশ খাবার পরিপাকে খুব ভালো সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। লালশাকে মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। লালশাকে রয়েছে অনেক পরিমাণে পুষ্টি যার কারণে শরীরের লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। 

সেজন্য অ্যানিমিয়া রোগ এবং অন্তসত্ত্বা নারীদের জন্য এই শাক খুবই উপকারী হয়ে থাকে। সেজন্য খাবারের তালিকায় লাল শাক রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শরীরে টক্সিক উপাদান গুলো দূর করতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার কোষ উৎপন্ন হতে দেয় না। লাল শাক এ ভিটামিন সি এবং কে থাকার কারণে আমাদের দেহের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়।

আমাদের শরীরে মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডকে অনেক বেশি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। শরীরের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে হ্রাস করে লাল শাক। শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম জমে গেলে শরীরে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয় সেগুলো প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে লাল শাক।লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ অনেক পরিমাণ হওয়ার জন্য মানুষের কাছে বেশী চাহিদাপুণ্য।

পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেছেন লাল শাকে অনেক পরিমাণ পুষ্টি থাকে যার কারণে আমাদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে লাল শাক। আবার দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে। লাল শাকে রয়েছে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি এছাড়াও রয়েছে-
  • নিয়াসিন 
  • থায়ামিন প্রোটিন
  • প্যানটোথেনিক এসিড
  • ফলেট
  • রিব্লোবিন
খনিজ উপাদান গুলো হলো
  • ক্যালসিয়াম
  • কপার
  • সেলেনিয়াম
  • জিংক
  • ম্যাঙ্গানিজ
  • ফসফরাস
  • আয়রন
  • পটাশিয়াম আরো ইত্যাদি।

পালং শাকের পুষ্টিগুণ ও  উপকারিতা

পালং শাক স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী খাদ্য। আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ পালং শাক পছন্দ করে। পালং শাক মধ্যে অনেক পুষ্টি আছে যা আপনার শরীরের ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, এগুলো ফিরিয়ে দিতে পারে। পালং শাকে রয়েছে অনেক পরিমান পুষ্টি যা একজন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ভালো। একটা মানুষের শরীর দুর্বলতা অনেক কাজ ব্যস্ততার জন্য হয়ে থাকে। 

পালং শাক যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়মিত খেতে পারে তাহলে শরীরের দুর্বলতা থকবে না। শরীর সুস্থ রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে পালং শাক। ওজন কমাতেও অনেক বেশি সাহায্য করে। পালং শাকের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ যার ফলে শরীরের সকল দুর্বলতা কাটিয়ে দিতে সাহায্য করে। পালং শাকের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকার কারণে এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি সাহায্য করতে পারে। 

সবুজ শাকের মধ্যে লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ  খুবই বেশী। পালং শাক কাঁচা ভাবেও খাওয়া যায় এবং রান্না করেও খাওয়া যায় আপনার যেভাবে ইচ্ছা আপনি খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের পুষ্টি যোগাবে সেই সাথে আপনি স্যুপ তৈরি করেও খেতে পারেন। আবার ডালের মধ্যে দিয়েও রান্না করতে পারেন যেকোনো শাক সবজির সঙ্গেও রান্না করতে পারেন এই পালং শাক। সেজন্য নিয়মিত খাদ্যের তালিকায় পালং শাক রাখতে পারেন।  

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ পালং শাকের মধ্যে পটাশিয়াম থাকার কারণে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়। রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে এই পালং শাক খুবই উপকারী। সেজন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত পালং শাক রাখতে পারি। আশা করি বিষয়টি পড়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন পালং শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।

কোলেস্টেরল কমাতে পালং শাকে রয়েছে অনেক পরিমান পুষ্টিগুণ। পালং শাকের মধ্যে যে গুলো পুষ্টিগুণ রয়েছে তা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেজন্য আমরা আমাদের খাদ্য তালিকায় পালং শাক রাখবো। 

লবণের ভারসাম্য পালং শাকের মধ্যে রয়েছে অনেক পরিমাণে পটাশিয়াম। আমাদের শরীরের সোডিয়াম বা লবণ হারিয়ে যায়। সেগুলোর ভারসাম্য ফিরিয়ে নিয়ে আসতে অনেক বেশি সাহায্য করে সোডিয়াম বা লবণ। সেজন্য আপনি পালং শাক খেতে পারেন।  

মাথাব্যথা দূর করে আমাদের শরীরে পুষ্টি জোগাতে পালং শাক অনেক বেশি কার্যকরী। যাদের মাথা ব্যথা হয় তাদের পালং শাক খাওয়া খুব বেশী দরকার এতে করে মাথা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য অন্যান্য খাবারের সাথে সাথে পালং শাক খাওয়াটা প্রয়োজন।
ক্যালসিয়াম ১০০ মিলিগ্রাম পালং শাক থেকে ৭৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। আমাদের শরীরে এই ক্যালসিয়াম খুবই দরকার সেজন্য আমাদের খাবারের তালিকায় পালং শাক রাখতে হবে।

ভিটামিন এ পালং শাকের মধ্যে রয়েছে অনেক পরিমানে ভিটামিন এ। আমাদের শরীরে ভিটামিন এ থাকার কারণে চোখ ভালো থাকে এবং শরীরের স্বাস্থ্য ভালো থাকতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

পালং শাকে এত পরিমাণ পুষ্টিগুণ থাকে যার ফলে শরীরের সমস্ত দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকার কারণে রক্ত বাড়াতেও অনেক বেশি সহায়তা করে। একজন সুস্থ মানুষ থাকার জন্য শরীরে যে যে উপাদান গুলো দরকার সেগুলো সবকিছুই এই পালং শাকের মধ্যে রয়েছে। ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আরো ইত্যাদি।

পালং শাকে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি আছে। সেজন্য ওজন ভাড়া নিয়ে কোন চিন্তা নেই। পালং শাকের মধ্যে যে ম্যাগনেসিয়াম আছে সেটা ব্লাড প্রেসার কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। রক্তের ক্ষেত্রে কণিকা মাত্রা বজায় রাখতে পালং শাক খুব উপকারী একটি উপাদান। 

দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ক্যান্সারেরও ঝুঁকি কমায়। পালং শাকের মধ্যে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যা চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে পালং শাক ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে এবং হাতে-পায়ে যাদের ব্যথা সেগুলো ঠিক হয়ে যায়। লাল শাক ও পালং শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা আমাদের অনেক প্রয়োজন। এইটা পূর্বে সুন্দর করে আলোচনা করেছি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিবেন।

পালং শাক আমাদের শরীরে এত পরিমাণে পুষ্টি দেয় যে বলতে গেলে শেষ হবেনা। পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা অনেকেই জানিনা। জেনে নিন উপকারিতাগুলো।
  • পালং শাকে রয়েছে উচ্চতা তাপমাত্রার ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের দেহের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। 
  • পালং শাকে থাকা বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ থাকার কারণে রক্তের শ্বেত কণিকা দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • পালংশাকে থাকা বেশি পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকার কারণে চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
পালং শাক মল নাড়ির ভিতরে জমে থাকা মল গুলো সহজে বের করে দিতে সহায়তা করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ আছে তাদের জন্য এই শাকটি অনেক উপযোগী। পালং শাকের কচি পাতা শরীরের জ্বালাপোড়া ফুসফুস কণ্ঠনালী সমস্যা এগুলো সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। 

এই শাক জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের খাওয়ানো হয় তাদের জন্য এই শাক বিশেষ উপকারী একটি উপাদান।ক্ষতস্থান, পোড়া ঘা, ব্রোন, এগুলো সমস্যা থাকলে টাটকা পালং পাতার রস করে লাগিয়ে রাখলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এই পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ বি সি এবং আয়রন থাকে এজন্য এই পালং শাক আমাদের শরীরের রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

পালংশাকের পুষ্টিগুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে মধ্যে রয়েছে-
  • পটাশিয়াম ২০৮ মিলিগ্রাম।
  • আয়রন ১১.২ মিলিগ্রাম।
  • ক্যালসিয়াম ৭৩ মিলিগ্রাম।
  • পটাশিয়াম ২০৮ মিলিগ্রাম
  • নিকোটিনিক এসিড ০.৫ মিলিগ্রাম।
  • প্রোটিন ২.০ গ্রাম।  
  • কার্বোহাইড্রেট ২.৮ গ্রাম।
  • ফসফরাস ২০.৩ মিলিগ্রাম।
  • আঁশ ০.৭ গ্রাম। 
  • অক্সালিক এসিড ৬৫২ মিলিগ্রাম। 
এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। এর ভিটামিনের পরিমাণ-
  • থায়ামিন ০.০৩ মিলিগ্রাম।
  • ৯৩০০ আই ইউ।
  • ভিটামিন সি ২৭ মিলিগ্রাম।
  • রিবোফ্লোবিন ০.০৮ মিলিগ্রাম।

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়া কি নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়া কি নিরাপদ? আমাদের এই গুলো বিষয় জানা অবশ্যই প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অনেক পরিমাণ ভিটামিন খাবার ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পড়ে যায়। এগুলো ঘাটতি পূরণ করার জন্য ক্যালসিয়াম প্রোটিন ও ভিটামিনযুক্ত খাবার  গ্রহণ করা প্রয়োজন। গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্য তালিকায় যে উপাদানগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তাদের মধ্যে একটি হলো পালং শাক।

পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড। ফলিক এসিড এমন একটি জিনিস যার মাধ্যমে জন্মগত বিকৃতি এড়ানো যায় এই মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় ভিটামিন। তবে বেশি পরিমাণ পালং শাক খেলে নিজে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সেজন্যে গর্ভবতী মহিলাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়া উচিত এর বেশি না। 
 
গর্ভবতী মহিলাদের পালং শাক খাওয়া ভালো পালং শাকের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম, ইত্যাদি রয়েছে। এই পালং শাক বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা সেজন্য মা ও শিশু জন্য অনেক ভালো। ১০০ গ্রাম পালং শাকের সাথে পুষ্টির সরবরাহ করে ২৩ কেসিএএল, ৯৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৭৯ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ৫৫৮ মিলিগ্রাম ২৮.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ফোলেড ১৯৪ গ্রাম ৪৯ মিলিগ্রাম ফসফরাস ৬৯ মিলিগ্রাম সোডিয়াম এগুলো পুষ্টি সরবরাহ করে ১০০ গ্রাম পালং শাকে।

পালং শাকে রয়েছে অনেক বেশি পুষ্টি। পালং শাক রক্তচাপের হ্রাস এবং চোখের স্বাস্থ্য উন্নতি করতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্যর জন্য প্রচুর উপকার এই পালং শাক। আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য একটি অনেক বেশি প্রয়োজন। 

কারণ আপনার শিশুর স্বাস্থ্য বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অনেক পরিমাণ মতো স্বাস্থ্যকর জিনিস খেতে হবে। অনেক স্বাস্থ্যকর জিনিস মধ্যে পালং শাক হল একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। যার ফলে গর্ভাবস্থায় আপনার শিশুর পুষ্টি সরবরাহ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আপনি যদি আমাদের পোস্ট পড়ে একটুও উপকৃত হয়ে থকেন। তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আপনি যদি আমাদের পোষ্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেন তাহলে আপনার মাধ্যমে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করুন। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন