খিচুনি রোগের লক্ষণ ও খিচুনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো খিচুনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আপনাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আজকে আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং আরো জানাবো খিচুনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে সম্পূর্ণ পোস্টটা মনোযোগ সহকারে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

খিচুনি রোগের লক্ষণ ও খিচুনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন

মস্তিষ্ক আঘাত লাগার কারণে অনেক সময় খিচুনির প্রবলেম হয়ে থাকে। আজকে এই পোস্টে শিশুদের খিচুনি রোগের চিকিৎসা, বাচ্চাদের খিচুনি রোগের লক্ষণ ও খিচুনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে পোস্টের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।সেগুলো জানতে হলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়া অনুরোধ রইল।

ভূমিকা

ছোট বড় সব বয়সের মানুষেরই খিচুনি রোগ হতে পারে। গ্লুকোজ ও পটাশিয়ামের অভাবে কারণে অনেক সময় এই খিচুনির রোগ দেখা দেয়। খিচুনি রোগ থেকে পরবর্তী সময়ে অন্য রোগের উৎপত্তি হতে পারে। মস্তিষ্কের কার্যকর ক্ষমতা ব্যাঘাত ঘটার কারণে খিচুনি সমস্যা হয়ে থাকে। তবে এখনো কোনো বিজ্ঞানী ঠিকমতো বলতে পারেনি।

যে কিসের কারণে খিচুনি রোগ সমস্যা দেখা দেয়। খিচুনি রোগীদের সবসময় চোখে চোখে রাখা উচিত। নতুবা অনেক সময় খিচুনি উঠে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে। খিচুনি রোগীদের ঘুমের ব্যাঘাত যেন না ঘটে সেদিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। সঠিক ঘুম আর ওষুধ যদি ঠিক ভাবে খাওয়ানো হয়।

তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আজকে আমরা এই পোস্টে খিচুনি রোগের কারণ, খিচুনি রোগের খাবার ও বাচ্চাদের খিচুড়ি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। সেগুলো জানতে হলে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

খিচুনি রোগের কারণ

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় প্রতিটি রোগের প্রাদরভাব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে খিচুনি প্রায় অনেক মানুষেরইরয়েছে। খিচুনি হলো মস্তিষ্কের অকার্য কার্যকলাপ। মানুষের যখন মস্তিষ্কে সঠিক ভাবে সিগন্যাল না পাই বা রক্ত চলাচল করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। তখন খিচুনি প্রবলেম দেখা দেয়। মস্তিষ্কে টিউমারের কারনেও অনেক সময় খিচুনি রোগ হয়ে থাকে।

অনেকে আবার বংশগতি হিসেবেও এই খিচুনির সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। অনেকের আবার মস্তিষ্কে আঘাত লাগার কারণে ছোটবেলা থেকেও খিচুনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। খিচুনি রোগে আক্রান্ত হলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা উচিত। না হলে খিচুনি রোগ থেকে অন্য বড় ধরনের রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম ও গ্লুকোজের অভাবে খিচুনি রোগ হয়ে থাকে। খিচুনি রোগে আক্রান্ত হলে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন শরীরে হঠাৎ করে অবশ হয়ে যায়, মাথা সামনে অংশ নিচের দিকে ঝুল পরে ,চেতনা হারিয়ে ফেলে ,মস্তিষ্কে বিকৃত হয় এবং হাত-পা পুরো শরীর বরফের মত ঠান্ডা হয়ে শক্ত হয়ে যায়।

হঠাৎ করে মাথা ব্যাথা সৃষ্টি হয় ও মুখের মধ্যে দিয়ে লাল ফেনা বের হতে থাকে। শ্বাস প্রশ্বাস সমস্যা হয় ও ছোট শিশুদের খিচুনি রোগে আক্রান্ত হলে ১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি জ্বর হয় এবং বাচ্চা হঠাৎ কাপতে থাকে ইত্যাদি। এ সমস্যাগুলো থাকলে অনেক সময় বাচ্চারা দ্রুতঅসুস্থ হয়ে যায়।

খিচুনি আক্রান্ত রোগীদের সবসময় আগুন ও পানি থেকে দুরে রাখা উচিত ।নতুবা অনেক সময় পানিতে পড়ে যেতে পারে। চাই যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া।

খিচুনি রোগের লক্ষণ

অনেক সময় মস্তিষ্কে আঘাত লাগার কারণে খিচুনি সৃষ্টি হয়। কিন্তু আসলে কোন ডাক্তারএখন পর্যন্ত খিচুনি রোগের মূল কারণ বলতে পারেনি। মস্তিষ্কের জরতার ভাব থাকলে যদি ব্রেন সঠিকভাবে শরীরের সাথে কানেকশন না পাই তাহলে খিচুনি সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতিটা মানুষেরই খিচুনির রোগ সম্পর্কে ধারণা নেওয়া উচিত।

বর্তমানে খিচুনি রোগ ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। খিচুনি রোগের লক্ষণ গুলো যদি বারবার লক্ষ করেন তাহলে বুঝে নিতে হবে যে তার তার খিচুনি রোগ রয়েছে। বর্তমানে অনেকেরই এই রোগটি দেখা দিচ্ছে ।চলুন তাহলে দেখা যাক খিচুনি রোগের লক্ষণ সমূহ।শরীর হঠাৎ করে অবশ ও শীতল হয়ে যাওয়া।

  • মাথা ও মুখ শরীরের বিভিন্ন অংশের সামনের দিকে ঝুলে পড়া।
  • হঠাৎ করে মুখ দিয়ে কথা ও আওয়াজ বের হয় না।
  • চেতনা হারিয়ে ফেলা।
  • শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অকেজ হয়ে পড়া এবং মাটিতে পতিত হওয়া।
  • মস্তিষ্কের বিকৃতি হওয়া।
  • হাত-পাসহ পুরো শরীর বরফের মত শক্ত হয়ে যাওয়া।
  • শরীরের উপর সঠিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা।
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের পরিবর্তন।
  • হঠাৎ করে মাথা ব্যথা সৃষ্টি হওয়া।
  • মাত্র সহায়ক কার্যক্ষমতা দিন দিন হ্রস পেতে থাকা।
  • মুখের মধ্যে ফেনা সৃষ্টি হওয়া।
  • হঠাৎ করে মাথা ঘোরা ও ভয় পেতে থাকা।

শিশুর খিচুনি রোগের চিকিৎসা

বাচ্চাদের মস্তিষ্কের সঠিকভাবে বিকাশ না হওয়ার ফলে পরবর্তী সময় খিচুনির সমস্যা হতে পারে। গ্লুকোজ ও ক্যালসিয়ামের অভাবে বাচ্চাদের খিচুনি হয়ে থাকে। খিচুনি হলে অতিরিক্ত জ্বর হয় যেমন ১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফরেনহাইট। শিশুদের জ্বর জনিত খিচুনিকে কনভারশন বলে।

খিচুনি রোগ কয়েক ধরনের আছে। একদিনের মধ্যে যদি রোগীর ৩ থেকে ৪ বার খিচুনিতে আক্রান্ত হয় তাহলে মনে করে নিতে হবে যে মৃগী রোগ হয়েছে। বাচ্চাদের অনেক সময় বংশ গতভাবে খিচুনি রোগ হয়ে থাকে।শিশুদের খিচুনি রোগের চিকিৎসা দেখা যাক।

  • সর্বপ্রথম ডাক্তারেরপরামর্শ অনুযায়ী খিচুনি রোগের সঠিক চিকিৎসা করা উচিত।
  • সব সময় সতর্কতার সহিত ডাক্তারে পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানো উচিত।
  • জ্বরকে সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে এবং সব সময় জ্বরের ওষুধ বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
  • বাচ্চাদেরকে পুকুরের পা বা আগুনের কাছ থেকে দূরে রাখা উচিত। নতুবা অনেক সময় সেন্সলেস হয়ে পানিতে পরে যেতে পারে।
  • শিশুর ঘুমে যেন কোন প্রকার ঘাটতি না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • খিচুনি রোগ ভালো হয়ে গেলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খিচুনির ঔষধ বন্ধ করা প্রয়োজন।

বাচ্চাদের খিচুনি রোগের লক্ষণ

বর্তমানে শিশুদের খিচুনি রোগ প্রায় দেখা যায়। কিন্তু অনেকেই খিচুনি রোগ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে বাচ্চাদেরই রোগ হলেও অনেক মা বুঝতে পারে না।যার ফলে বাচ্চা পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই প্রত্যেকটি বাচ্চাদের খিচুনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে মায়েদের ধারণা নেওয়া উচিত।

মস্তিষ্কের সমস্যা জনিত কারণে বাচ্চার খিচুনির রোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এর থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়া প্রয়োজন। চলুন তাহলে বাচ্চাদের খিচুনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানা যাক।

  • বাচ্চাদের খিচুনি রোগ হলে ১০২ থেকে ১০৪ টি ডিগ্রী জ্বর হয়।
  • প্রসাব পায়খানা নিয়ন্ত্রণের করতে না পারা।
  • মুখ দিয়ে অঝোরে লালা পড়তে থাকা।
  • কয়েক মিনিট স্থায়ী খিচুনি হওয়া।
  • বাচ্চাদের হাত পা হঠাৎ করে কাপতে থাকা।
  • বাচ্চাদের মাংস পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া।

খিচুনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

হঠাৎ করে যদি কেউ কখনো রাস্তা বা বাড়িতে খিচুনি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তখন তাকে অনেকেই মাথায় পানি দেয়।অনেকে আবার এই রোগে আক্রান্ত রোগীদেরকে নাকে সামনে জুতো ধরে এগুলো ঠিক নয়। কখনো যদি কোন ব্যক্তি মনে হয় যে খিচুনিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে তখন তাকে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে শুয়ে দেওয়া উচিত।

ও পরবর্তী সময় বাসায় নিয়ে এসে খাটে এক কাত করে শুয়ে দেওয়া উচিত চিত করে শোয়ানো যাবে না। শোয়ানোর সময় কোন প্রকার বালিশ দেওয়া প্রয়োজন নেই। কখনোই চিত করে সোয়াবোনার চেষ্টা করবেন না এক সাইডে কাত করে শোয়াতে হবে।

খিচু্তেনি আক্রান্ত হওয়ার পর কখনোই আপনারা দাঁতে বা মুখের ভিতরে চামচ বা অন্য কোন কিছু দেওয়ার দরকার নেই। কাত করে শুইয়ে দিলে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে ধীরে ধীরে রোগী সুস্থ হতে থাকবে। পরবর্তী সময়ে তাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

খিচুনি রোগীর খাবার

খিচুনি রোগীদের সব সময় সাবধানে রাখা উচিত। একা বাসা থেকে বের হয়ে গেলে অনেক সময় রাস্তাতেও খিচুনি উঠে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। খিচুনি আক্রান্ত রোগীদের পানি ও আগুন থেকে দূরে রাখা উচিত না হলে অনেক সময় খিচুনি ওঠার কারণে পানিতে পড়ে যেতে পারে। এই খিচুড়ি রোগ মুক্তি পেতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি কিছু পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

যা খেলে খিচুনি রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। খিচুনি রোগ ছোট বড় উভয় বয়সের হয়ে থাকে। যদি কারো খিচুনির সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। পানির পাশাপাশি লেবু ও ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ও এই খিচুনি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। মাসিকের সময় খিচুনি থেকে রক্ষা পেতে মটরশুটি খাওয়া প্রয়োজন।

মটরের সাথে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রোটিন যা আমাদের মাসিকের ব্যথা পোষণ করতে সাহায্য করে। বেশি খিচুনি ব্যথা সারতে বাদাম বেশ কার্যকর। বাদামে ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন থাকে যা খিচুনি জন্য বেশ উপকারী। পেশিতে খিচুনি হলে কলা খাওয়াও প্রয়োজন। দ্রুত খিচুনি থেকে আরাম পেতে মধু আর দারচিনি মিশে খাওয়া প্রয়োজন।

নিয়মিত রসুন খেলেও খিচুনি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কারণ এন্টিঅক্সিডেন্ট যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে । খিচুনি প্রবলেম থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচাইতে ভালো মাধ্যম হলো বিশ্রাম নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম হলে মস্তিষ্ক ভালো থাকে যার ফলে এই রোগ দ্রুত ভালো হতে পারে।তার উপর সবগুলো খিচুনি রোগীদের খাওয়ানো প্রয়োজন।

অবশেষে বলা যায়

বর্তমানে বিশ্বে ব্যাপক ভাবে খিচুনি রোগের প্রভাব দেখা দিচ্ছে। এর রোগ থেকে মুক্তি পেতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে। এতক্ষণে আপনারা হয়তো খিচুনি রোগের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেয়েছেন? তাই উপরের সব বিষয়গুলো মাথায় রেখে খিচুনি রোগীদের দেখাশোনা করতে হবে। খিচুনি রোগ ভালো হয়ে গেলে ওষুধ ছেড়ে দিলে হবে না।

ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা উচিত। না হলে পরবর্তী সময় আবার খিচুনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রিয় বন্ধুরা আমাদের খিচুনি রোগের লক্ষণ নিয়ে লেখা পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট পাওয়া পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন