গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় জেনে নিন

গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আপনাদের অনেকেরই ত্বকের শুষ্কতা হয়ে থাকে। কিন্তু এই শুষ্কতা দূর করার উপায় সম্পর্কে আপনাদের হইত তেমন কোনো ধারণা নেই। সেজন্য আমি আজকে একটি সঠিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় জেনে নিন

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন, মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায়, গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায়,ত্বক শুষ্ক হওয়া রোধ করার উপায়, ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণ, কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়, এই সকল বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।

ভূমিকা

অনেক মানুষের গরমে ত্বকের শুষ্কতা বেশি বেড়ে যায়। বিভিন্ন সমস্যার কারণেও এটি হয়ে থাকে। কিন্তু এটার সমস্যা দূর করার জন্য অনেকেই অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করেন। এই শুষ্কতা কারণে মানুষের অনন্যা রোগ হতে পারে। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

যদি আপনার এই বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকে। তাহলে আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। তাহলে সমস্ত বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে জানতে পারবেন। এছাড়াও মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায় উপায় সম্পর্কেও আলচনা করেছি। আশা করি এই বিষয়েও সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।

কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়

অনেক পুষ্টিবিদ্যারা বলেছেন যে বিশেষ কোনো ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে আপনার ত্বক অনেক শুষ্ক হয়ে যাবে। এছাড়া শরীরে যদি ভিটামিন সি এর অভাব দেখা দেয় তাহলে এই সমস্যা হতে পারে। শুধুমাত্র যে এই দুটি সমস্যা সেটা নয়। এই সমস্যা নিয়ে আরো নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ভিটামিন সি এর অভাবে আরো কোন কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ যদি আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব দেখা দেয়। তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়বে। আপনি ঘন ঘন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবেন।

ওজন বৃদ্ধিঃ অনেক মানুষের ওজন কমাতে কতই না কি করে। তবে যদি আপনার ভিটামিন সি এর অভাব দেখা দেয়। তাহলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষ করে পেটে চর্বি জমা হবে আরও বেশি করে।

শুষ্ক ত্বকঃ ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে অনেক ভালো সাহায্য করে। তাই যদি ভিটামিন সি এর অভাব দেখা দেয় তাহলে আপনার ত্বককে শুষ্ক ও ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে এই সমস্যাটা শীতে অনেক বেশি বেড়ে যায়।

সহজে ক্ষত শুকায় নাঃ আপনার শরীরে যদি ভিটামিন সি এর অভাব হয়। তাহলে ক্ষত খুব আস্তে আস্তে সেরে উঠবে। কারণ ভিটামিন সি ক্ষত সেরে উঠতে বেশ ভালো সহায়তা করে। তাই যদি আপনার ঘাটতি থাকে তাহলে ধীরে ধীরে সেরে উঠবে। এছাড়াও ভিটামিন সি এর অভাবে সংক্রমণের বিস্তারও আরো অনেক বেশি বৃদ্ধি হতে পারে।

জয়েন্টের ব্যথাঃ অনেক সময় দেখা যায় হাড়ের চারপাশে অনেক বেশি ব্যথা হয়ে থাকে। এই ব্যথা ভিটামিন সি এর অভাবে হয়ে থাকে। এছাড়াও হাড়ের চারপাশে অনেক বেশি ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। তাই ভিটামিন সি এর অভাব যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করবেন।

অবিরাম ক্লান্তিঃ অনেক সময় অনেক মানুষ বিভিন্ন কাজ করার ফলে অনেক ক্লান্তিবোধ চলে আসে। তবে এই ক্লান্তি ভিটামিন সি এর অভাবে হয়ে থাকে। এছাড়াও খিটখিটে মেজাজ, অলসতা, এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।

দাঁত এবং মাড়ি থেকে রক্তপাতঃ বিশেষ করে বয়স্ক ও ছোট বাচ্চাদের দাঁত এবং মাড়ি থেকে রক্তপাত বের হতে দেখা যায়। এটি হওয়ার কারণ হচ্ছে ভিটামিন সি এর অভাব। এছাড়াও এই ঘাটতি মারাত্মকভাবে ধারণ করলে আপনার দাঁত পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ভিটামিন সি এর অভাব যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করার চেষ্টা করবেন। আশা করি কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয় সেটি জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।

ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণ

ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণ অনেক  থাকতে পারে। এর মধ্যে পরিবেশগত কারণেও হতে পারে। তবে আরও কিছু কারণ নিচে দেওয়া হল।
 
গরম পানিতে গোসলঃ গরম পানিতে অনেক কয়দিন গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল হারিয়ে যেতে পারে, যার ফলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে।

সূর্যের আলোঃ যদি আপনি অতিরিক্ত সূর্যের আলোতে থাকেন। তাহলে ত্বকের পানিশূন্যতা তৈরি করতে পারে।

শীতকালঃ ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয়, যার ফলে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়।  

ক্ষারযুক্ত সাবান ও ডিটারজেন্টঃ ক্ষারযুক্ত সাবান ও ডিটারজেন্ট ত্বকের প্রাকৃতিক তেল শুষে নিতে পারে। এতে করে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। 

অতিরিক্ত স্ট্রেসঃ স্ট্রেস ত্বকের তেল উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে।

পানিশূন্যতাঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়া কারণে ত্বক শুষ্ক হতে যেতে পারে। 

ধূমপানঃ ধূমপান ত্বকের রক্ত ​​সঞ্চালন কমিয়ে দেয় এবং ত্বক খুব দ্রুত শুষ্ক করে তোলে। 
  
অ্যালকোহল ও ক্যাফেইনঃ অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন ত্বক থেকে পানি বের করে দিতে পারে। 

এছাড়াও অন্যান্য কারণও হতে পারে, যেমনঃ

বয়সঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকের তেল উৎপাদন অনেক কমে যায়, যার ফলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে।
জিনগত কারণঃ কিছু লোক রয়েছে। যাদের জজাদে সমস্যার কারণে ত্বক শুষ্ক হতে পারে।
চর্মরোগঃ কিছু চর্মরোগ রয়েছে যেমন একজিমা এটি ত্বককে শুষ্ক করে তুলতে পারে।  
ওষুধঃ কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কারণেও ত্বক শুষ্ক হতে পারে।

ত্বক শুষ্ক হওয়া রোধ করার উপায়

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুনঃ প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করবেন। এতে করে ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে মুক্তি পাবেন। 
 
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুনঃ নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখুন।

গরম পানিতে গোসল করা এড়িয়ে চলুনঃ গরম পানির পরিবর্তে হালকা গরম বা ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন। এতে করে ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে মুক্তি পাবেন। 

ক্ষারযুক্ত সাবান ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুনঃ মৃদু সাবান ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন।

সূর্যের আলো থেকে ত্বককে রক্ষা করুনঃ বাইরে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। আশা করি ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণ সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায়

আজকে আমরা আলোচনা করব গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় সম্পর্কে। অনেকেরই এই গরমে ত্বকের জ্বালাপোড়া সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। যেগুলো আপনার গরমে ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে। অনেক সময় দেখা যায় যে গরমের কারণে প্রচুর পরিমাণে ঘাম সৃষ্টি হয়। আর এই ঘামের কারণে মুখের চামড়া অনেক শুষ্ক হয়ে যায়। 

অনেক সময় অনেক কাজের কারণে বাইরে ঘোরাফেরা করার সময় সূর্যের তাপ অতিবেগুনি রশ্মিও ত্বকের ওপরে এসে প্রভাব ফেলে। আর এই প্রভাব ফেলার কারণে ত্বকের শুষ্কতা আরো অনেক বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ত্বকের রোদ লাগার কারণে ত্বক থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম বের হতে লাগে। এই ঘাম থেকে ময়লা জমে তারপর ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। এই জন্য ত্বকের ভিতরে থাকা যে ক্ষতিকর টক্সিন রয়েছে সেটি আর বের হতে পারে না।

এই কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, যেমন কালো দাগ, ব্রণ, ঘামাচি এবং র‌্যাশ ইত্যাদি। নিয়মিত ত্বকের যত্ন না নিলে এসব আপনার দীর্ঘমেয়াদী হয়ে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই গগরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় না জেনে থাকলে। দ্রুত জেনে নিন। তাহলে আপনার ত্বক শুষ্কতা থেকে মুক্তি পাবে।অনেক মানুষের রোদে পুড়ে ত্বক অনেক কালো হয়ে যায়। এই সমস্যা দূর করতে গুড়া দুধ, কাঁচা হলুদ ও সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে।

এরপর বাইরে থেকে আসার পরে সেই পেস্টটুকু ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। ৫ থেকে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে আপনার রোদে পোড়া কালো দাগ খুব দ্রুত দূর হয়ে যাবে এবং আপনার ত্বক অনেক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। প্রচন্ড রোদের কারণে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। এছাড়াও বাইরে থাকার কারণে অনেক ধুলাবালি, ময়লা ত্বকে জমে যায়। এর ফলে ত্বকে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়।

এই সমস্যাগুলো দূর করতে আলু ও ডিমের পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। ১ থেকে ২ আলু প্রথমে বেটে নিবেন। এরপর এর সঙ্গে একটি ডিমের সাদা অংশ খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিবেন। তারপর সেই পেস্টটুকু মুখে পাতলা করে লাগিয়ে রাখবেন। এইটা লাগিয়ে রাখবেন ৫ থেকে ১০ মিনিট। এরপর সেটি পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন। তারপর মশ্চারাইজার লাগিয়ে নিবেন। এতে করে তৈলাক্ত ভাব এবং ময়লা দুটোই দূর হয়ে যাবে এবং আপনার ত্বক অনেক স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

রোদে থাকার কারণে ত্বক অনেক পুড়ে যায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেকটাই কমে যায়। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দুধ, বাঙ্গির রস ও মধু একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর গোসলের আগে সারা শরীরে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর পরিস্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে সুন্দর করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। যদি আপনি এটা করতে পারেন তাহলে আপনার মুখের উজ্জ্বলতা অনেকটা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার রোদে পোড়া কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। এটি সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করলে অনেক উপকার মিলবে।

নিম পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে আমরা সবাই হয়তো জানি।  চুলকানি, ব্রণ, ঘামাচি, খোসপাঁচড়া বিভিন্ন চর্মরোগ এই সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পেতে এই নিম পাতার কার্যকারী অতুলনীয়। এই গুলো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমাদের যা করতে হবে সেটা হচ্ছে গরম কুসুম পানির সঙ্গে নিম পাতা ভিজিয়ে রেখে সেই পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।

এতে করে আপনার শরীরে থাকা বিভিন্ন রোগ জীবাণু দূর হয়ে যাবে। এতে করে আপনার ত্বক অনেক সুরক্ষা পাবে।এছাড়াও মুখ ধোয়ার যে ফেসওয়াশ রয়েছে সেটা ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন। আশা করি গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় সম্পর্কে আপনি একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায়

পূর্বে আমরা জেনেছি গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় সম্পর্কে। এখন আমরা জেনে নেব মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায় সম্পর্কে। কমবেশি অনেকেরই রয়েছে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই ত্বক শুষ্ক হয়। এমনিতেই যাদের ত্বক শুষ্ক হয় তাদের অন্যদের চেয়ে সমস্যাটা অনেক বেশি হয়ে পড়ে। এই সময়টাতে তারা কি করবে সেটা বুঝে উঠতে পারে না। 

বিশেষ করে শীতের সময় কারো কারো ত্বক অতিরিক্ত খসখসে হয়ে যায়। এছাড়াও ত্বক খসখসে হওয়ার পাশাপাশি ঠোঁট ফেটে যায়। আবার এই শুষ্কতা হওয়ার কারণে অন্য রোগের লক্ষণও হতে পারে। নিয়মিত মশ্চারাইজার লাগানো পরও যদি ত্বক শুষ্ক হয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার অন্য কোন সমস্যা রয়েছে। তখন আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

সাধারণত আমাদের দেশে শীতকালে ত্বক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। কারণ শীতকালের আবহাওয়াটা অনেক ঠান্ডা বাতাস বয়ে থাকে। ঠিক এই কারণে শুষ্ক ত্বক হয়ে যায়। এছাড়াও কারো কারো বংশগত বা জিনগত কারণেও হয়ে থাকে। কিছু কিছু মানুষের ৪০ বছর পরও তেল ও ঘাম গ্রন্থের সংখ্যা অনেক কমে যায়। ত্বক শুষ্ক হওয়ার আরো অন্যান্য কারণ রয়েছে ক্লোরিনযুক্ত পানিতে অতিরিক্ত গোসল করলে এই সমস্যাটা হয়ে থাকে।

আবার ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করলে, অ্যালকোহল, ধূমপান এগুলো অতিরিক্ত করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, এগুলোর অভাব হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এই ত্বক শুষ্ক হওয়ার আরও বিভিন্ন রকম কারণ রয়েছে। তবে এর প্রতিকার অবশ্যই আপনাকে জানা উচিত। মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায় যদি জানা না থাকে। তাহলে জেনে নিতে পারেন। তাই আসুন এর প্রতিকার জেনে নেওয়া যাক।

  • মুখ ও ত্বক শুষ্ক যেন না হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
  • আপনার মুখ ও ত্বক কেন শুষ্ক হচ্ছে। এটার প্রকৃত কারণ  খুজে বের করে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
  • গোসল করার সময় ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। যদি পারেন তাহলে ময়শ্চারাইজার যুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন। 
  • আপনাকে ত্বক ভালো রাখতে হলে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এটি লাগানোর আগে অবশ্যই ত্বকের যে মরা কোষগুলো রয়েছে সেগুলো পরিষ্কার করে নিতে হবে। 
  • প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ শরীরে যদি পানি পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে ত্বক শুষ্কতা অনেকটা কমে আসে। এছাড়াও নরম সুতির যে পোশাক রয়েছে সেটি পরিধান করার চেষ্টা করবেন। 
  • যদি পারেন তাহলে অবশ্যই হাতের তালু ও পায়ের তলার যত্ন নিবেন। এই সময়ে যদি আপনি ১০ শতাংশ ইউরিয়া, ভ্যাসলিন লাগাতে পারেন তাহলে আপনার হাতের তালু অনেকটা মসৃণ হয়ে থাকবে। আবার অনেক সময় দেখা যায় শীতে পায়ের তলা ফেটে যায়। এই সময় নিয়মিত ভেসলিন মাখলে পায়ের তলা ফাঁটা থেকে আরাম পাওয়া যাবে।  
  • মুখের যত্ন নিতে হবে। যদি পারেন তাহলে মশ্চারাইজার যুক্ত যে ক্রিমগুলো রয়েছে সে ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে পারেন। তবে যাদের ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা এই ক্রিম এর সাথে একটু পানি মিশ্রণ করে মুখে লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে করে কোন সমস্যা হবে না। তবে শীতকালে বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। 
  • অনেক সময় দেখা যায় আবহাওয়া কারণে ঠোঁট ফেটে যায়। কখনো কখনো আবার এতো বেশি ফেটে যায় যে সেই ফাটা চামড়া থেকে সময় রক্ত বের হয় এবং অনেক কষ্ট পাওয়া যায়। তবে একটি সতর্কতা সেটা হচ্ছে জিব্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো যাবে না। এটা একদমই উচিত নয়। যদি পারেন তাহলে কুসুম গরম পানিতে একটি পরিষ্কার কাপড় ভিজে নিবেন। এরপর সেই ভেজা কাপড়টি ঠোঁটে হালকা করে ৪ থেকে ৫ বার চাপ দিতে পারেন। তারপর ভ্যাসলিন অথবা গ্লিসারিন হালকা করে লাগিয়ে রাখুন। এতে করে আপনার ঠোঁট অনেক যত্নে থাকবে।
  • যদি আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। তাহলে আরো ভালো হয়। যদি পারেন তাহলে গোসল করার কয়েক মিনিট আগে আপনার সারা শরীর অলিভ অয়েল দিয়ে মেখে নিতে পারেন। তারপর গোসল করতে পারেন। এতে করে আপনার ত্বক অনেক যত্নে থাকবে।
  • মুখ খসখসে ভাব দূর করতে নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে অনেক উপকার পাবেন।
  • যদি পারেন তাহলে মুখের খসখসে ভাব দূর করতে অ্যালোভেরা জেল ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট ব্যবহার করার পর ধুয়ে ফেলুন। এতে করে খসখুসে ভাব দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্‌। যদি পারেন তাহলে প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি খাবেন। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করবেন। এছাড়াও ত্বকের পরিচর্যা করতে হবে।
  • যাদের অনেক সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ পুরনো চর্মরোগ রয়েছে, যেমন  ইকথায়সিস, একজিমা, সোরিয়াসিস ইত্যাদি। তাদের ত্বকের সমস্যা অনেক সময় দেখা যাচ্ছে যে বেড়ে যেতে পারে। তাই এগুলো বেড়ে যাওয়ার আগেই আপনাকে সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে সবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আশা করি মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। 

শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন

পূর্বে আমরা জেনেছি যে মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায় সম্পর্কে। এখন আমরা জেনে নিবো শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন নেয়া উপায় সম্পর্কে। অনেকেই রয়েছে ঘরে থেকেও বিভিন্ন কারণে যত্ন নিতে পারে না। সেজন্য আজকে কিছু উপায় বলবো যেগুলো কাজের ফাঁকে ফাঁকেও করতে পারবেন। আসুন তাহলে সে ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নিন।

অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি শুষ্ক ত্বক মুক্তি পেতে অনেক বেশি সাহায্য করে। যাদের শুষ্ক ত্বক রয়েছে তারা এই অ্যালোভেরার জেল লাগাতে পারেন। ঘুমাতে যাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে অ্যালোভেরার জেল শুষ্ক ত্বকে লাগিয়ে নিবেন। এরপর সকালে উঠেই আপনি দেখতে পাবেন এর ভালো ফলাফল।

মধুঃ শুষ্ক থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মধু ব্যবহার করতে পারেন। এটি শুষ্ক ত্বকের পাশাপাশি চর্মরোগ এবং বিভিন্ন শরীরের সমস্যা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পেতে সাহায্য করে। মধু শরীরের জন্য অনেক উপকারী। মধু শুষ্ক ত্বক উপশম করার জন্য বেশ উপকারী। 

দুধ ও হলুদের গুঁড়াঃ শুষ্ক ত্বক ভালো করার জন্য দুধ এবং হলুদের গুঁড়া অনেক উপকারী। এটি ব্যবহার করার নিয়ম হচ্ছে ১ কাপ দুধের সাথে সামান্য একটু হলুদের গুড়া ভালোভাবে মিশে নিয়ে ত্বকে লাগাতে হবে। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পরিস্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে নিতে হবে। এতে করে আপনার ত্বক অনেক সুন্দর ও মসৃণ থাকবে।

শাকসবজি খেতে হবেঃ শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি পেতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কারণ শরীরে শাকসবজি পানি এগুলো থাকলে শরীর সবসময় তাজা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি ত্বকের পরিচর্যা করতে হবে। যদি কারো পুরনো চর্মরোগ থেকে থাকে। তাহলে শুষ্ক ত্বক আরো বেড়ে যেতে পারে। 

তাই এটি হবার আগে অবশ্যই সচেতন থাকবেন। প্রয়োজনে সবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন নিতে যে কাজগুলো করতে হবে। সেটি উপরে সুন্দর করে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার যদি ঘরোয়া যত্ন নিতে ইচ্ছা হয়ে থাকে। তাহলে আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। তাহলে সমস্ত কিছু খুব ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে পারবেন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি গরমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায় এবং মুখের খসখসে ভাব দূর করার উপায় সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url