দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয় | দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষন জানুন

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয় কি এই সম্পর্কে কোনো পোস্ট খুজতাছেন চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আজকে আমরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব ও আরো জানবো দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন হলে কি করনীয়। এই সম্পর্কে পোস্টর মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয় | দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষন জানুন

ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যেতে পারে এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে কি করনীয় ও দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সার লক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হলে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

ছোট থেকে বড় প্রায় প্রতিটি মানুষ দাঁতের সমস্যায় ভুগে থাকে। প্রতিটি মানুষেরই নিয়মিত দুইবার দাঁত ব্রাশ করা প্রয়োজন। অনেকেই সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ না করার জন্য দাঁতের ভেতরে খাদ্য কণা লেগে থেকে যা থেকে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তী সময় ইনফেকশনের মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

তাই প্রতিটি মানুষের নিয়মিত দুইবার ব্রাশ করা প্রয়োজন। আমরা এই পোস্টে জানবো দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন হলে কি করণীয় ও দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয় এই সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরিনা করে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে করণীয়

দাঁত হলো দেহের একটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। অনেক সময় দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় এটি বিভিন্ন কারনে ফুলে যেতে পারে। রোগের সংক্রমণে, ভিটামিন যুক্ত খাবার না খাওয়ার কারণে ও ধূমপান করা কারনে এবং দাঁত পরিষ্কার না করা কারনে ইত্যাদি। দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে প্রচন্ড ব্যথা সৃষ্টি হয় যার ফলে জ্বর আসতে পারে। দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে এটি থেকে কিছুটা নিস্তার পাওয়া যায়।

লবন পানিঃ লবণ পানিকে হালকা কুসুম গরম করে কুলুকুচি করলে দাঁতে ফোলা কমতে সাহায্য করে। দাঁতের ব্যথা দূর করতে ও লবণপানি বেশ উপকারী।

তেলঃ দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে দাঁতের মাড়িতে তেল এর সাথে একটু লবণ ব্যবহার করা উচিত।তেল মুখের ভিতরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ নাশ করে এবং দাঁতের মাড়ি ফুলা কমায়।

হলুদঃ হলুদের কারকিউমির নামক একটি বিশেষ পদার্থ ও আছে যা দাঁতের মাড়ি ফোলা কমাতে সাহায্য করে এবং দাতে ব্যথা উপশমের বেশ কার্যকর।

আদাঃ আদা আমাদের জন্য বেশ উপকারী একটি ব্যবহার বহু কাল থেকে ওষুধিক কাজে ব্যবহার করে আসছে। আদা দাঁতের মাড়ি ফোলা কমাতে বেশ কার্যকর।

জোয়ানঃ জোয়ান থাকে এন্টিফাঙ্গাল ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা আমাদের মাড়ি ফোলা সংক্রমণ রোধ করে। আমাদের দাঁতের মাড়ি ভালো রাখতে জোয়ান বেশ কার্যকর।

লেবুর রসঃ লেবুতে ভিটামিন সি আছে। আমরা যদি নিয়মিত সকাল বেলায় ওঠে লেবুর রস দিয়ে গারগিল করি। তাহলে মুখের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে পারি এবং দাঁতের ফোলা ভাব থাকলে ও কমে যেতে সাহায্য করে।

লবঙ্গঃ দাঁতের জন্য সবচাইতে ভালো হলো লবঙ্গ। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই লবঙ্গ থাকে। তাই দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে লবঙ্গ ব্যবহার করলে দাঁতের মাড়ি ফোলা ভালো হতে সাহায্য করে।

মাড়ির ফোলা রোধকারী টুথপেস্টঃ দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাজার থেকে টুথপেস্ট সংগ্রহ করতে হবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। তাহলে এ রোগ থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়ার সম্ভব।

কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়

দাঁত আমাদের দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট। দাঁত খালি খাদ্য চিবাতে সাহায্য করে না হাসি সুন্দর করতেও দাঁত বেশ কার্যকর। যদি দাঁত ভালো না থাকে তাহলে শরীর ও ভালো লাগেনা। ভিটামিনের অভাবে আমাদের অনেক সময় দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় ও বিভিন্ন ব্যাথা সৃষ্ট হয়। আবার দাঁতের সঠিকভাবে ব্রাশ না করা কারণে এই সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। আজকে আমরা জানবো যে সব ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় সে সম্পর্কে।

ভিটামিন এঃমাড়ি সংশ্লিষ্ট জায়গা ভাল রাখতে ভিটামিন এ বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন এ মুখে লালা উৎপন্ন করে। মাছের তেল, শাকসবজি ,মিষ্টি আলু, আম, গাজর ইত্যাদিতে ভিটামিন এ থাকে।তাই মাড়ি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার জন্য প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে।

ভিটামিন বিঃভিটামিন বি মুখমণ্ডলের ভিতরে ঘাঁ প্রতিরোধে সাহায্য করে।তাই যে কোনো রকমের ঘাঁ হলে ভিটামিন বি যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমন সবুজ শাকসবজি, গরুর মাংস, ছিম, মটরশুটি ইত্যাদি।

ভিটামিন সিঃভিটামিন সি দাঁতে কর্মদক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে ও বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সাধন করতে বেশ কার্যকর। অনেক সময় ভিটামিন সি এর পরিমাণ কমে গেলে মাড়ি দিয়ে রক্তপাতের সমস্যা হয়ে থাকে। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য ভিটামিন সি যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। যেমন আমলকি, পেয়ারা,লেবু,কাঁচা মরিচ ও কমলা ইত্যাদি।

ভিটামিন ডিঃভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।যার ফলে দাঁত ও মাড়ি সুস্থ থাকবে। দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য ভিটামিন ডি বেশ কার্যকর। সূর্যের কিরণ থেকে আমরা ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি।

দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয়

অনেক সময় আমাদের দাঁতে স ক্ষত সৃষ্টি হয়ে থাকে সেই ক্ষত পরে ইনফেকশন পরিণত হয় । সেখান থেকে ব্যথা উৎপত্তি হয় এবং একপর্যায়ে পুজ বের হয়। সাধারণত এটি দাঁতের ও মাড়ির মাঝখানে হয়ে থাকে।এনামেল ও ডেন্টিন ক্ষয় করে ক্যারিজ যখন পাল্পে আক্রমণ করে তখন একপর্যায়ে ব্যথা সৃষ্ট হয় এবং সেখান থেকে পুজের উৎপত্তি হয়।

দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয় দ্রুত ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। কুসুম গরম লবণ পানি দিয়ে গর্গেল করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব ডক্টরের নিকটে যেতে হবে।

দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষন

দাঁতে ও মাড়িতে দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দেখা দিলেপ্যানক্রিয়েটিক ক্যান্সারের প্রকোপ দেখা যায় ।বর্তমান বিশ্বের সবচাইতে বড় ভয়াবহ রোগ হল ক্যান্সার। আমাদের দাঁতে মাড়িতে অনেক সময় ক্যান্সার হয়ে যায় কিন্তু আমরা বুঝতে পারি না।তাই আজকে আমরা দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের হলে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায় সে সম্পর্কে জানব।
ক্যান্সারের লক্ষন
  • হজম শক্তি সমস্যা সৃষ্টি হয়।
  • পেটের উপরের অংশ ব্যথা হয়।
  • বমি বমি ভাব সৃষ্টি হয়।
  • অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব সৃষ্টি হয়।
  • ৫০ বছরের অধিক বয়স হয়ে গেলে ডায়াবেটিসের প্রকোপ বেড়ে যায়।
  • জন্ডিস রোগ হলেও চোখ সাদা থাকে কিন্তু ত্বক হলুদ হয়ে যায়।
  • খাবারে অরুচি ভাব আসে।
  • ধীরে ধীরে ওজন কমতে শুরু করে।
  • দাঁত থেকে রক্তপাত হয়।
  • দাঁত নড়বড় করে।
  • খাদ্য গিলতে সমস্যা হয়।
  • মুখের ভেতরের টিউমার হয়েছে এমন মনে হয়।

দাতের মাড়িতে ক্যান্সারের ছবি





দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন হলে কি করনীয়

দেহের একটা অংশ বিশেষ হলো দাঁত। খাদ্য হজম করার জন্য দাঁত সাহায্য করে। আমরা অনেক সময় খাবার খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করি না যার ফলে দাঁতের পোকা বা দাঁতের মাড়ির বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।দাঁতের সঠিকভাবে যত্ন না নেওয়ার কারণে অনেক সময় দাঁতে ইনফেকশনের সৃষ্টি হয়। আবার অনেক সময় দাঁতের মাড়িতে পুঁজ পড়ে যদি কারো দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয় দ্রত ডাক্তারের পরার্মশ নিয়ে ঔষধ খাওয়ার।

একটা সুস্থ জীবনের জন্য দাঁতকে ভালো রাখাও অত্যন্ত প্রয়োজন। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি মানুষেরই দাঁতের কোনো না কোনো সমস্যা হয়ে থাকে। অপুষ্টিকর খাদ্য, সিগারেট ও ভিটামিন হিন খাবার খেলে তাতে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। প্রতিটি মানুষেরই সকালে ও রাতে ব্রাশ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় না হলে আমাদের খাদ্য কণা দাঁতের সাথে লেগে গিয়ে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি করে।

যার ফলে অনেক সময় ঘাঁ সৃষ্টি হয় এবং ঘা থেকে ইনফেকশনে পরিণত হয়।পর্যায়ক্রমে ইনফেকশন থেকে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগও সৃষ্টি হতে পারে।তাই আমাদের দাঁতের পরিচর্যা করা উচিত।বাচ্চারা অতিরিক্ত চকলেট খাওয়ার ফলে দাঁতের সমস্যা হয়ে থাকে।তাই আমরা দেখবো দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন হলে আমাদের যেসব উপায় অবলম্বন করতে হবে সে সম্পর্কে জানব।

টি ট্রি অয়েলঃ অনেক সময় আমাদের ইনফেকশন সৃষ্টি হয়। ইনফেকশন রোধের জন্য টি ট্রি অয়েল গুরুত্বপূর্ণ।টি ট্রি অয়েল ইনফেকশন সারতে অ্যান্টিসেপটিক এর মতো কাজ করে। দুই ফোঁটা টি ট্রি অয়েল সাথে এক চা চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে ইনফেকশন আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে দিলে এবং পরবর্তী ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর কুলি করে ফেলতে হবে। তাহলে ইনফেকশন থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এসব এর সাথে সাথে ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া অনুযায়ী ঔষধ খাওয়া উচিত।

মধুঃ দাঁতের মাড়ির ইনফেকশন রোধে মধু বেশ কার্যকর। তাই দাঁতে মাড়িতে ইনফেকশন হলে আপনারা চাইলে মধু দিয়ে দেখতে পারেন। মধু ইনফেকশনের যুক্ত স্থানে ব্যাকটেরিয়া নাশ করতে সাহায্য করে।

হলুদঃ হলুদ মানব দেহে অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। হলুদে কারকিউমিন নামক একটি বিশেষ পদার্থ আছে যা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে বেশ কার্যকর। তাই দাঁতের মাড়ির বিভিন্ন ইনফেকশন রুখতে হলুদ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

অবশেষে বলা যায়

দাঁত আমাদের দেহের একটি বিশেষ অংশ। তাই দাঁতের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিত ডেন্টিস্ট এর কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে। প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমাদের দাঁতের মাড়িতে পুঁজ হলে করনীয় নিয়ে লেখা পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। পরবর্তী পোস্ট পাওয়া পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন