ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন পদ্ধতি বিস্তারিত জানুন

ব্রয়লার মুরগির কি এলার্জি আছে-ব্রয়লার বৃদ্ধি ঔষধের নাম জানুন প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো পোস্ট খুজতাছেন কিন্তু পাচ্ছেন না চিন্তার কোনো কারণ নেই।আপনাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আজকে আমরা এই টপিক নিয়ে আলোচনা করবো এবং আরো আলোচনা করবো ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার কোথায় পাওয়া যায় নিয়ে। তাহলে চলুন দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন পদ্ধতি বিস্তারিত জানুন

আমিষের চাহিদা পূরণে ব্রয়লার মুরগির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা এই পোস্টে আর আলোচনা করব ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম ও ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা পালনের নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।

ভূমিকা

বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রতিটি দেশে প্রায় ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করা হয়।ব্রয়লার মুরগি পালনের সময় সব নিয়ম কানুন মেনে পালন করা উচিত ।তানাহলে অনেক সময় ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা ক্ষতি হতে পারে ।সেদিকে খেয়াল রেখে আমাদের সব সময় কাজ করতে হবে। ব্রয়লার মুরগির বাচ্চাকে ঠান্ডা লাগা থেকে দূরে রাখতে হবে এবং সব সময় ভ্যাকসিন প্রদান করতে হবে। যার ফলে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা সুস্থ থাকবে। ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার চেনার উপায়

ব্রয়লার মুরগি লালন পালনের পূর্বে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা নির্বাচন করা প্রয়োজন। অনেকেই বাচ্চা কেনার সময় বুঝতে পারে না কেমন বাচ্চা নিলে সে বাচ্চা টিকে থাকবে। এর জন্য কিছু সহজ টিপস ফলো করতে হবে যার ফলে আপনি সহজেই সঠিক গ্রোথের বাচ্চা চিনতে পারবে। চলুন তাহলে দেখা যাক কিভাবে আমরা ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা চিনতে পারব।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা নির্বাচনের সময় চঞ্চল প্রকৃতির বাচ্চা নিতে হবে।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার গা যেন সাদা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ব্রয়লার মুরগির চোখ নাক দিয়ে যেন পানি না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চোখ নাক দিয়ে পানি পড়া বাচ্চা নেওয়া ঠিক নয়। সে বাচ্চাগুলো মরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা যেন খাদ্য দিলে গ্রহণ করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চাকে যদি উল্টে দেওয়া হয়। তখন যদি সে বাচ্চা সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে তাহলে সে বাচ্চা নিতে হবে নতুবা নয়।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা নেওয়ার সময় দেখতে হবে বাচ্চা চোখ যেন না বুঝে থাকে। অনেক সময় চোখ বুঝা বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে থাকার কারণে চোখ খুলতে পারে না।
  • ব্রয়লার মুরগি বাচ্চা নেওয়ার সময় নাভি চেক করে নিতে হবে। অনেক সময় নাভি না শুকানোর কারণে ইনফেকশন সৃষ্টি হতে পারে।

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন পদ্ধতি

বাংলাদেশের আমিষের চাহিদা পূরণে ব্রয়লার মুরগির গুরুত্ব অতুলনীয়। বাংলাদেশের সব শ্রেণীর লোক ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনে খেতে পারে। ব্রয়লার মুরগির মাংস অন্য সব মুরগি মাংসের চাইতে একটু কম দাম। আমাদের দেশে গরুর মাংসের দাম তুলনা মূলক ভাবে বেশি হয়। ব্রয়লার মুরগির মাংস থেকে প্রায় সবাই আমিষের চাহিদা পূরণ করে।

আমাদের দেশে বড় বড় খামারিরা ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করছে। এর ফলে অনেক খামারি প্রচুর লাভে মুখ দেখেন আবার অনেক খামারি সঠিকভাবে পরিচালনা না করার জন্য অনেক সময় লোকসানের মুখে পড়ে যায়। বাংলাদেশের অনেকেই শুধু গোস্ত উৎপাদনকারী ব্রয়লার মুরগি পালন করে থাকে। আবার অনেকেই ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করে।

সেগুলো বাজারের রপ্তানি করে শহরের তুলনায় গ্রামে বড় বড় ব্রয়লার মুরগির ফ্রম দেখা যায়। এসকল ফ্রম থেকে ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন হয়ে সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এভাবেই প্রত্যেকটি মানুষ নিজ নিজ আমিষ চাহিদা পূরণ করে থাকে। হ্যাচারি ও ইনকিউবেটর সাহায্যে ব্রয়লার বাচ্চা কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদন করা হয়।

আমরা হয়তো অনেক দেখেছেন গ্রামের অনেকেই মুরগিকে ছোট কোন গামলা ভেতরে বসিয়ে পেটের তলে 10 থেকে 11 টি ডিম বসিয়ে বাচ্চা উৎপাদন করে। বর্তমানে ইনকিউবেটর সাহায্যে হাজার হাজার মুরগির বাচ্চা একসাথে পালন করা হয়। এই সকল উৎপাদিত বাচ্চাকে কয়েক দিন ভ্যাকসিন করার পর গোটা দেশ ব্যাপী বিক্রি করা হয়।

যার ফলে ব্রয়লার এর খামারের মালিক কোটি কোটি টাকা ইনকাম করে। এই সকল ব্রয়লারের বাচ্চাকে প্রায় টানা ৩৫ দিন ভালোভাবে লালন পালন করার পরে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। ৩০ থেকে ৩৫ দিন পালন করার পরে প্রতিটি বয়লার মুরগি ওজন প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি হয়ে যায়।

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম

বাংলাদেশের প্রায় অন্যান্য মুরগির তুলনায় ব্রয়লার মুরগি বেশি উৎপাদন করা হয়। ব্রয়লার মুরগি আমাদের দেহের আমিষের চাহিদা পূরণে সক্ষম। অন্যান্য মাংসের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম তুলনা মূলক কম থাকার কারণে এই মাংসটি দেশব্যাপী জনপ্রিয়। সব শ্রেণীর লোকেরাই ব্রয়লার মুরগি খেয়ে থাকে।

এই ব্রয়লার মুরগি গুলো উৎপাদনের জন্য প্রথমে বিভিন্ন বড় বড় খামারিদের হ্যাচারি থেকে ছোট ছোট ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা সংগ্রহ করতে হয়। তারপর সে বাচ্চা গুলোকে সঠিক সময় পর্যন্ত লালন পালন করার ফলে পরে সেগুলোকে বাজারে বিক্রি করে।যা আমাদের আমিষে চাহিদা পূরণের সক্ষম হয়। বর্তমানে প্রতিটি বাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কার সাজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম ঊর্ধ্ব গতিতে বাড়তে শুরু করেছে।

যার ফলে ক্রেতাদের অনেক সময় বিপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে ও হ্যাচারি থেকে কিনে আনার সময় ব্রয়লার মুরগির খামারিদেরকেও প্রচুর টাকা খরচ করতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি পিস ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম প্রায় ৭০ টাকা কিন্তু বাজারের দাম কম বেশি হওয়ারর কারণে অনেক সময় ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যেতে পারে। তাই আপনারা ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা নেওয়ার সময় দাম মাথায় রেখে কিনবেন।

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা কোথায় পাওয়া যায়

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে ব্রয়লার মুরগি পালন করছে। এই ব্রয়লার মুরগি পালন করার ফলে তাদের আমিষের ঘাটতি পূরণের সহায়তা করে। আমাদের দেশে প্রায় অনেক মানুষ ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করে থাকে। তারা প্রথমবার উৎপাদন করার সময় অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করার জন্য প্রথমে বাচ্চা নির্ধারণ করতে হবে।

কিন্তু অনেকেই জানে না ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা কোথায় পাওয়া যায়।ব্রয়লার মুরগির মাংস দেশ ব্যাপী জনপ্রিয় বর্তমানে এক গবেষণায় জানা গেছে ব্রয়লার মুরগির মাংসে কোন ক্ষতিকর দিক নেই।তাই নিঃসন্দেহে প্রতিটি মানুষ ব্রয়লার মুরগির মাংস গ্রহণ করতে পারে। বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে থাকে তাদের মধ্যে নাহার এগ্রো এখন অন্যতম হ্যাচারি কোম্পানি।

এখানে সপ্তাহে লক্ষ লক্ষ ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয়ে থাকে। এই ব্রয়লার মুরগি সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়ার কারণে প্রত্যেকটি ব্রয়লার মুরগির খামারি বাচ্চা কিনে ব্রয়লার মুরগির খামার তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে। তাই ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা ক্রয় করতে বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি সাথে যোগাযোগ করুন।

ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা পালনের নিয়ম

ব্রয়লার মুরগি প্রায় লাজুক প্রকৃতির হয়ে থাকে। যার কারণে অল্পতেই এই ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার অসুখ সৃষ্টি হতে পারে। তাই সাবধানে ব্রয়লার বাচ্চা পালন করা উচিত।ব্রয়লার মুরগি বাচ্চা পালনের জন্য কিছু নিয়ম পালন করতে হয়। চলুন বন্ধুরা আজকে আপনাদের আমি সেই নিয়ম নীতি সম্পর্কে বলবো।
  • প্রথমে বাচ্চা তোলার পর তিন দিন হ্যাচারিতে ভালো করে জীবাণু নাশক প্রয়োগ করতে হবে। তারপর পরবর্তী বাচ্চা বসাতে হবে।
  • হ্যাচারীর তাপমাত্রা ঠিক রাখতে হবে নতুবা বাচ্চার ডিম নষ্ট হয়ে যাওয়া আশঙ্কা থাকে।
  • বাচ্চা উঠার পর প্রথমে পরিষ্কার শুকনা জায়গায় বাচ্চা গুলোকে রাখতে হবে এবং সঠিক পরিমাণে
  • লাইট যুক্ত করতে হবে যেন বাচ্চার ঠান্ডা না লাগে। অনেক সময় ঠান্ডা থাকার কারণে বাচ্চাদের ঠান্ডা লেগে বিভিন্ন প্রকার রোগের প্রকোপ দেখা দেয়।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চাকে নিয়মিত তিন দিন পর থেকে ভ্যাকসিন প্রদান করতে হবে।
  • ব্রয়লার মুরগিকে ব্রয়লারের খাদ্য দিতে হবে ও পানি দিতে হবে সঠিক পরিমাণে।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চাকে রাতে বেলায় লাইট যুক্ত ঘরের মধ্যে রাখতে হবে এবং দেখতে হবে যেন বাতাস ঘরে প্রবেশ না করে।
  • ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার হ্যাচারী ভিতর ঢুকতে গেলে প্রথমে হাতে স্প্রে করে নিতে হবে। অথবা হাতে থাকা জীবাণু অনেক সময় ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার ক্ষতি সাধন করে।

অবশেষে বলা যায়

ব্রয়লার মুরগির মাংস প্রতিটি মানুষের খাওয়া দরকার।ব্রয়লার মুরগিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের মত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা চেনার সময় উপরের বিষয়গুলো মাথায় রেখে মুক্ত বাচ্চা নির্বাচন করা উচিত।ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান নিয়ে প্রত্যেকটি মানুষের ব্রয়লার মুরগি খামার করা দরকার।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন