পা কামড়ানো কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ, আজকে আপনাদের জানাবো পা কামড়ানো বা পা চাবানো কমানোর ব্যবস্থা সম্পর্কে। পা কামড়ানো সকল বয়সী মানুষের জন্য খুব পরিচিত একটি সমস্যা। বর্তমানে প্রায় আশি শতাংশ মানুষেরই এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পা কামড়ানো কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

পা কামড়ানো বা চাবানো এই সমস্যাটা দিনের বেলা কম থাকলেও রাতে বসে থাকলে বা শুয়ে পড়লে ব্যথাটা বেশি অনুভব হয়।

পা কামড়ানো সমস্যা সাধারণত যারা দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ করে অনেক সময় ধরে তাদের হয়ে থাকে। যেমন শিক্ষক, দোকানদার, গার্মেন্টস শ্রমিক তারা বেশি ভোগে এই সমস্যায়।

তবে যদি কারো পা কামড়ানোর সঙ্গে গায়ে জ্বর থাকে তিন দিনেরও বেশি ও শরীরের ওজন হঠাৎ করে কমতে থাকে তাহলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পা কামড়ানোর বা ব্যথা কেন হয়

হাত-পা কামড়ানোর ব্যথা কমানোর আগে  আমাদের জানতে হবে হাত-পা কামড়ায় বা চাবায় বা ব্যথা কেন হয়?

হাত পা কামড়ানো বা ব্যথা হওয়ার অনেক কারণ আছে। সাধারণত উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ আমি এখানে তুলে ধরলাম: 

ওজন বৃদ্ধি এটি একটি বিশেষ কারণ পা কামড়ানো বা চাবানোর। আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি হলে পা হাত কামড়ানো বা ব্যথা শুরু হয়। এরপর একটি বিশেষ কারণ হলো - যাদের থ্যালাসেমিয়া বা রক্তস্বল্পতা অ্যানিমিয়া এসব রোগ আছে তাদের হাত কামড়ানো বা ব্যথা হয়ে থাকে।

আবার যারা অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে শারীরিক পরিশ্রম করে তাদেরও হাত-পা কামরায় বা ব্যথা হয়ে থাকে। কারো শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে হাত-পা কামরায় বা ব্যথা হয়ে থাকে।

অনেক শিশুরও আবার হাত-পা কামড়ায় বা ব্যথা হয়। এর কারণ হলো ওদের শারীরিক কাঠামো বৃদ্ধি । এর ফলে তাদের হাত-পা কামরায় বা ব্যথা হয়ে থাকে। তবে থাইরয়েড, ডায়াবেটিস এগুলো  বিশেষ কারণ হাত-পা কামড়ানো বা ব্যথা হওয়ার।

পা কামড়ানো কমানোর উপায়

পা কামড়ানো কমানোর উপায়: পা কামড়ানো কমাতে হলে আগে আমাদের অবশ্যই নির্ধারণ করতে হবে যে আমাদের হাত-পা কেন কামড়াচ্ছে বা ব্যথা হচ্ছে। পা কামড়ানো কমাতে হলে সর্ব প্রথমে আমাদের অবশ্যই নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রতিদিন আমাদের পরিমান মত পানি পান করতে হবে। এটিও পা কামড়ানো কমানোর একটি বিশেষ উপায়।

হাত পা কামড়ানো কমানোর উপায়

হাত-পা কামড়ানো কমাতে হলে আমাদের অবশ্যই আগে নিশ্চিত হতে হবে যে আমাদের অ্যানিমিয়া বা থ্যালাসেমিয়া এরকম কোন সমস্যা আমাদের শরীরে হয়েছে কিনা। যদি এসব সমস্যা আমাদের শরীরে হয়ে থাকে তাহলে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে আমাদের হাত-পা কামড়ানো কমানো সম্ভব।

যদি আমাদের থাইরয়েড হয়ে থাকে তাহলে আমাদের নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে থাকলে হাত পা কামড়ানো বা চাপানো এমনিতেই কমে যাবে।

এরপর আসে ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখেও আমরা হাত-পা কামড়ানো কমাতে পারি। আবার ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণের মাধ্যমেও আমরা পা কামড়ানো বা পায়ের ব্যথা কমাতে পারি।

পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানো কারণ

পায়ের মাংসপেশী বা মাসল ক্র্যাম্প হওয়ার কারণ হলো সাধারণত রক্তে লবণের ঘাটতি হলে বা মাংসপেশিতে রক্ত প্রবাহ কমে গেলে পা কামড়াতে পারে। ডায়াবেটিস রোগী ও ধূমপায়ীদের পা কামড়ায়। পায়ে রক্ত চলাচলের বিঘ্ন ঘটার কারণেও পা কামড়ায়।

শিশুরা অনেক ছোটাছুটি করে বলে তাদের পায়ের পেশীতে রক্ত প্রবাহে টান পড়তে পারে এর ফলে শিশুদের পা কামড়াতে পারে। অনেকক্ষণ রোদে হাঁটাহাঁটির ফলে শরীরে লবণের ঘাটতি হয় এর কারনেও পা কামড়াতে পারে।

পা কামড়ানো কিসের লক্ষণ

তবে পা কামড়ানো হতে পারে মাংসপেশি, স্নায়ু জটিলতার লক্ষণ। যেমন মেয়োপ্যাথি বা ডিসটোনিয়া জাতীয় জটিল রোগের উপসর্গ। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে এটি।

পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর উপায়

মাংসপেশীতে ব্যথা কমানোর উপায় সাধারণত যারা দাঁড়িয়ে পরিশ্রম করেন তারা যেন অবশ্যই ২০ মিনিট পর কিছুক্ষণ বসে আরাম করে। সারাদিনই এই জিনিসটা আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।

আবার যারা দাঁড়িয়ে বিদ্যালয়ে পড়ান তারা ক্লাসের মাঝে শিক্ষার্থীদের নিয়েই একটি পায়ের ব্যায়াম করতে পারেন। এর ফলে তাদের পড়তে ভালো লাগবে আবার পায়ের মাংসপেশী কামড়ানো বা ব্যথা ও কমে যাবে।

ধূমপান থেকে বিরত থেকে পা কামড়ানো বা ব্যথা কমাতে পারি। অ্যালকোহল সেবন না করেও পায়ের ব্যথা বা কামড়ানো কমাতে পারি। নিয়মিত পরিমাণ মতো পানি পান করেও আমরা পা কামড়ানো ব্যথা কমাতে পারি। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেয়ে আমরা পা কামড়ানো পা ব্যথা কমাতে পারি।

পা চাবানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

আমরা পায়ে গরম শেক বা ঠান্ডা শেক দিয়ে পা চাবানো কমাতে পারি। আবার হালকা গরম পানিতে পা ভিজিয়ে পায়ে রাখতে পারেন এর ফলেও পা কামড়ানো বা চাবানো তাড়াতাড়ি কমে যেতে পারে। গরম পানি মগে নিয়ে যতটুকু তাপ আপনি সহ্য করতে পারেন তা পায়ে ঢাললেও পা চাবানো বা কামড়ানো কমে যেতে পারে।

আবার ব্যথার মলম ব্যবহার করেও পায়ের মাংসপেশী কামড়ানো বা চাবানো কমানো যায়। বিভিন্ন ধরনের মাসাজ দিয়েও পা কামড়ানো বা চাবানো কমানো যায়।

আবার বিভিন্ন ধরনের ব্যান্ডেজ বা অর্থসিস যেগুলো পড়ে আপনার আরাম লাগে তাহলে এগুলো করতে পারেন। সর্বোপরি আপনাকে মনে রাখতে হবে যেটা দিয়ে আপনার আরাম লাগে সেই পদ্ধতিটি গ্রহণ করতে হবে।

পা কামড়ানো কমানোর ঔষধ

প্যারাসিটামল জাতীয় কিছু ওষুধ খেয়ে আমরা পা কামড়ানো কমাতে পারি। ওস্টেড ডি এটিও একটি ঔষধ বা কামরানো কমানোর। তবে পা কামড়ানোর ওষুধ সেবন এর পূর্বে আমাদের অবশ্যই একজন রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানো ঔষধ

পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানোর ঔষধ সেবনের পূর্বে আমাদের অবশ্যই আগে নির্ধারণ করতে হবে আমাদের পায়ের মাংসপেশী কেন ব্যথা করতেছে বা কামরাচ্ছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আমাদের কোন ধরনের ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। তবে প্যারাসিটামল আমরা সেবন করতে পারি যে কোন কোম্পানির।

পরিশেষে বলা যায় যে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল জাতীয় খাদ্য পান, রাতে পায়ের কিছু সাধারণ ব্যায়াম, পরোক্ষ ব্যায়াম। তবে কখনো কখনো কুইনিন সালফেট জাতীয় ঔষধ সেবন পা কামড়ানো কমানোর উপায়। বেশিরভাগ পা কামড়ানোর কারণ সাময়িক। বিচলিত হওয়ার মতো মোটেও কিছু নয়।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন