গ্যাস্ট্রিক দূর করার সহজ ৬ টি ঘরোয়া উপায়

গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য বেশি চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আমাদের শরীরে খুবি সাধারণ একটি বিষয় হয়ে ওঠেছে। গ্যাস্ট্রিকের জন্য পেটে জ্বালাপোড়া, পেট ব্যাথা, পেট ভরা ইত্যাদি আরও নানান সমস্যা দেখা দেয়।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার সহজ ৬ টি ঘরোয়া উপায়

গ্যাস্ট্রিক হওয়ার কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেন ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত ইত্যাদি খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক হয় তবে এটি পুরোপুরি সত্যি না একেক মানুষের একেক খাবারে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। তাই কোন খাবারে আপনার গ্যাস্ট্রিক হয় সেটি কষ্ট করে খুঁজে বের করতে হবে তাই গ্যাস্ট্রিক হলে অনেক গুলো খাবার খাওয়া বন্ধ করার প্রয়োজন নেই।

গ্যাস্ট্রিক হয়ে গেলে সেটি নিয়ে চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই আপনি কয়েকটি কাজের মাধ্যমে খুব সহজেই গ্যাস্ট্রিক দূর করতে পারবেন। গ্যাস্ট্রিক দূর করতে এই উপায় গুলো খুবই ভালো কাজ করে।

সময় মতো খাবার খাওয়া

আপনি যদি প্রতিদিন অনিয়ম করে খাবার খান তাহলে আপনার শরীরে গ্যাস্ট্রিক দেখা দিতে পারে। এছাড়াও সময় মতো খাবার না খেলে গ্যাস্ট্রাইটিস নামক আরেকটি রোগ দেখা দিতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে পাকস্থলীতে ঘা, ক্ষত, পেটে জ্বালাপোড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিবে তাই আপনি বুঝতেও পারবেন না কেন আপনার পেটে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না। প্রতিদিনের খাবার সব সময় নিয়ম করে সময় মতো খাবেন এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই কমাতে পারবেন।

মাথার দিকটা উঁচু করে ঘুমানো

গ্যাস্ট্রিক কমাতে খুবি প্রচলিত ও সহজ একটি প্রকৃয়া হলো মাথার দিকটা উঁচু করে ঘুমানো। মাথা উঁচু করে ঘুমালে পেটের ভিতরে থাকা এসিড ইসোফেগাস পর্যন্ত আসতে পারে না তাই গ্যাস্ট্রিক খুব দ্রুত দূর হয়ে যায়।

অনেকেই আছে মাথা উঁচু করে ঘুমানো জন্য মাথার নিচে দুটো বালিশ দিয়ে ঘুমায় কিন্তু গ্যাস্ট্রিক দূর করতে এই ভাবে মাথা উঁচু করলে এতে ঘাড়ে ব্যাথা সহ আরও সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই মাথা উঁচু করে ঘুমানো জন্য আপনি মাথার দিকটা উঁচু তোশক ব্যবহার করতে পারেন।

চুইংগাম চাবানো

অনেক সময় দেখা গেছে চুইংগাম চাবানোর কারণে গ্যাস্ট্রিকের জন্য হওয়া বুকে জ্বালাপোড়া কমে যায়। চুইংগাম চাবানো কারণে মুখে অনেক লালা তৈরি হয় এই লালা উপরে আসা এসিড দূর করে দেয় যার কারণে গ্যাস্ট্রিকের জন্য হওয়া জ্বালাপোড়া দ্রুত দূর হয়ে যায়। চুইংগাম চাবানো সময় চুইংগাম থেকে বের হওয়া মিষ্টি উপাদান টুকু না খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই গ্যাস্ট্রটিক দেখা দিলে বুকে জ্বালাপোড়া শুরু হলে চুইংগাম চাবাতে পারেন।

ঘুমানোর ৩-৪ ঘন্টার আগে খাবার খাওয়া

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশির ভাগ খাবার পরেই দেখা দেয় কারণ খাবার খাওয়ার পরেই আমাদের পাকস্থলীতে এসিড তৈরি হয় তাই খাবার খাওয়ার পরেই ঘুমিয়ে পরলে গ্যাস্ট্রিক দেখা দেয়। তাই চেষ্টা করবেন ঘুমানোর ৩-৪ ঘন্টা আগে খাবার খাওয়ার এতে এসিড উৎপন্ন হয়ে আবার কমে যায় যার কারণে ঘুমানোর পর আর গ্যাস্ট্রিক হওয়ার যুকি থাকে না। এছাড়াও ঘুমানোর আগে খাবার খেয়ে একটু রুমের মধ্যে হাটাহাটি করে ঘুমাতে পারেন।

আদা খাওয়া

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে আপনি আদা খেতে পারেন। আমাদের মধ্যে অনেকর পেটে রাতে খাবার খাওয়ার পরে জ্বালাপোড়া করে, গলা জ্বলে, পেটে ব্যাথা হয়। এইসব সমস্যা দূর করতে কিছুটা আদার মধ্যে একটু লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন এরপর ১ গ্লাস হালকা গরম পানি খেয়ে ঘুমিয়ে যাবেন। আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এই ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত দূর হয়ে যাবে তাই রাতে এমন সমস্যা হলে আদা খেতে পারেন।

অ্যালকোহল ও কার্বনেটেড ড্রিংক খাওয়া কমানো

অ্যালকোহল ও কার্বনেটেড ড্রিংক অতিরিক্ত খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিক হওয়ার পাশাপাশি শরীরে বিভিন্ন রোগ বালাই হওয়ার যুকি রয়েছে। কার্বনেটেড ড্রিংক হলো যে ড্রিংক গুলো থেকে বুদবুদ বের হয় যেমন কোকাকোলা, স্প্রাইট ইত্যাদি।

একসময় ধারণা করা হতো খাবার খাওয়ার পরে এইসব খেলে খাবার ভালেভাবে হজম হয় কিন্তু এসব ড্রিংক এমন কিছুই করে না বরং আরও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই গ্যাস্ট্রিক দূর করতে এইসব খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে আর পারলে একবারে খাওয়া বন্ধ করে দেন।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য ঔষধের উপর নির্ভর না হয়ে আপনি ঘরোয়া উপায় কাজে লাগাতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ গুলো দীর্ঘ দিন খেলে পাকস্থলীতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এই ঘরোয়া উপায় গুলো গ্যাস্ট্রিক দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগলে ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করতে পারেন এই উপায় গুলো গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url