পা কামড়ানোর কারণ ও সহজ ঘরোয়া প্রতিকার

পা কামড়ানোর কারণে অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেন না। পা কামড়ানোর সমস্যাটি অনেক কারণেই শরীরে দেখা যায়। অনেকেই আছে পা কামড়ানোর কারনে পায়ে গামছা বেদে রাখে, পা কামড়ানো শুরু হলে পা নাড়াচাড়া করে, হাটাহাটি করে তবে এই সব পা কামড়ানো কমাতে কোনো যুক্তির মধ্যে পরে না।

পা কামড়ানোর কারণ ও সহজ ঘরোয়া প্রতিকার

পা কামড়ানো কমাতে হলে আগে পা কামড়ানোর কারণ গুলো জানতে হবে। পা কেন কামড়ায় সেটা জেনে কাজ করলে খুব দ্রুত পা কামড়ানোর সমস্যা সমাধানে সুবিধা হবে। পা আসলে অনেক কারণেই কামড়ায়। যেমনঃ

ডায়বেটিসের কারণে

যাদের শরীরে ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে এই পা কামড়ানো সমস্যাটি দেখা যায়। ডায়াবেটিস সাধারণত ২ ধরনের হয়ে থাকে একটি হলো অটোইমিউন সিস্টেমে উৎপন্ন হওয়া রোগ, যেখানে শরীরের ইনসুলিন হরমোনের অকেজো হয়ে যায়। আরেক ধরনের ডায়াবেটিস হলো বেশি ওবেসিটি এবং অল্প শারীরিক কার্য্যের ফলে বিকশিত হয়ে যাওয়া। এই ধরনের সমস্যা থাকলে পা কামড়ায়।

ক্যালসিয়ামের অভাব

আমরা সবাই জানি ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের মাংসপেশি, হাড় ঠিক রাখতে কাজ করে। শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব বা ঘাটতি থাকলে পা কামড়ানোর সমস্যা দেখা যায়। এছাড়াও শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব বা ঘাটতি থাকলে পা কামড়ানোর পাশাপাশি রক্তচাপ, নিউরোমাস্কুলার, হরমোন জনিত ইত্যাদি রোগ হওয়ার যুকি বাড়িয়ে দেয়।

ফলিক এসিডের ঘাটতি

ফলিক এসিড শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ফলিক এসিড হলো ভিটামিন -বি ৯। ফলিক এসিড রক্তের গুঁড়ি নির্মাণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য চাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। অনেক সময় শরীরে এই ফলিক এসিডের ঘাটতির কারণে পা কামড়ানো সমস্যাটি দেখা যায়। ফলিক এসিড শরীরের কম থাকার কারণে পা কামড়ানো সমস্যাটির পাশাপাশি আরও বিভিন্ন রোগ বালাই সৃষ্টি হয়। তাই ফলিক এসিডের ঘাটতির কারণেও পা কামড়ানোর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

কিডনির সমস্যা

কিডনিতে সমস্যা থাকলে অনেক সময় পা কামড়ায়। কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিডনির কারণে শরীরের প্রকৃয়া গুলো সাধারণ ভাবে চলতে পারে। কিডনি মূত্রনিষ্কাসন, রক্ত পরিষ্কারণ, হরমোন উৎপাদন সহ আরও বিভিন্ন কাজে অংশ নেয় তাই কিডনিতে সমস্যা হলে পা কামড়ানো ছাড়াও আরও বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

এই কারণ গুলো পা কামড়ানো  সৃষ্টিতে বেশি দেখা যায় তবে পা কামড়ানো সৃষ্টি হওয়ার আরও অনেক কারণ আছে। রক্তে প্রদাহ সৃষ্টি হলে পা কামড়ানো দেখা যায়। অনেক সময় হাটাহাটি বা অনেক সময় এক যায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে পা কামড়ায়। এই পা কামড়ানো কমাতে কয়েকটি ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলতে পারেন এতে আপনার পা কামড়ানো অনেকটাই কমে যাবে।

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার

পা কামড়ানো কমাতে অবশ্যই আপনাকে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। পা কামড়ানো সমস্যাটি সৃষ্টি হওয়ার একটি বড় কারণ হলো শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব। এছাড়াও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাদবে। কিছু খাবারের মাধ্যমে খুব সহজেই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করা যায়। তাই খাবার তালিকায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই রাখবেন।

পানি বেশি পান করা

অনেক সময় শরীরে ডিহাইড্রেশনের কারণে পা কামড়ানো সমস্যাটি দেখা যায়। শরীরকে ডিহাইড্রেশন থেকে বাচাতে বেশি বেশি পানি পান করবেন। যারা পানি কম পান করেন তাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা লক্ষ করা যায়। তাই পানি বেশি বেশি পান করবেন এতে পা কামড়ানোর সমস্যাটি কমানোর পাশাপাশি অনান্য রোগ বালাই হওয়া থেকেও শরীরকে রক্ষা করে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম

পা কামড়ানো কমাতে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমালে শরীরে পা কামড়ানো ছাড়াও আরও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিন ৭ ঘন্টা সময় ঘুমালে সারাদিনের জন্য যথেষ্ট। তার পাশাপাশি চেষ্টা করবেন প্রতিদিন দিন এক সময়ে ঘুমানোর ও এক সময়ে ঘুম থেকে ওঠার। এতে পা কামড়ানো কমাতে অনেকটা সাহায্য করবে।

ব্যায়াম করা

ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনি পা কামড়ানোর সমস্যাটি কমাতে পারেন। আপনার পা কামড়ানোর সমস্যা থাকলে ব্যায়াম করতে পারেন। প্রতিদিন ব্যায়াম করা সম্ভব না হলেও আপনার জীবন যাত্রায় ব্যায়াম রাখতে পারেন। দিনে ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করলেই যথেষ্ট। তাই পা কামড়ানো কামাতে আপনার সুবিধা অনুযায়ী ব্যায়াম করবেন না শরীর ব্যাথা ও অনান্য সমস্যায় পরতে পারেন।

এইসব খাবার ও কাজের পাশাপাশি আপনি রোদ থেকে ভিটামিন-ডি গ্রহণ করতে পারেন, একটি সুস্থ জীবন পরিচালনা করতে পারেন ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুত পা কামড়ানো সমস্যাটি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আপনার পা কামড়ানোর সমস্যা যদি অতিরিক্ত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এই ঘরোয়া উপায় গুলোর মাধ্যমে পা কামড়ানো অনেকটাই কমাতে পারবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url