অতিরিক্ত চুল পড়ার দ্রুত ও সহজ সমাধান

অতিরিক্ত চুল পড়া নিয়ে অনেকই দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। এছাড়া স্টাইলিশ লুকের জন্যও চুল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই যখন এই চুলই আপনার মাথায় থাকবে না তখন আপনাকে দেখতেও ভালো দেখাবে না। সেই সাথে যাদের মাথায় চুল নেই তারা প্রায়ই নানান সমস্যার সম্মুখীন হন।

অতিরিক্ত চুল পড়ার দ্রুত ও সহজ সমাধান

তাই প্রশ্ন হচ্ছেঃ চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর জন্য আমরা কি করতে পারি? চুল পড়া বন্ধ করার আগে জানতে হবে কি কারনে চুল পড়ে যায়। চুল পড়ে যাওয়ার অনেক কারণ আছে তার মধ্যে থেকে কয়েকটি চুল পড়ার সময় বেশি দেখা যায়।যেমনঃ

মাথায় তেল না দিলে

এখনকার জেনারেশনের ছেলেরা মাথায় তেল দিতে একদম পছন্দ করে না। মাথার চুল তেলে চিপচিপা হয়ে যায় যার কারনে তারা একদমই তেল ব্যবহার করে না । একটি গাছ বড় করতে যেমন পানির প্রয়োজন ঠিক তেমনই চুল পড়া বন্ধ করতে তেলের প্রয়োজন। তবে এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তেল যেন কেমিক্যাল যুক্ত না হয়। কেমিক্যাল যুক্ত তেল চুল পড়া বন্ধ করার পরিবর্তে উল্টো চুলের ক্ষতি করে।

ভেজা চুল আঁচড়ানো

ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ানো চুল পড়া বা চুল ড্যামেজ হওয়ার একটি কারণ। আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা গোসলের পরেই চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ায়। ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ালে চুলের গোঁড়া ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই চুল কিছুটা শুকানোর পর আঁচড়ানো উচিত। এছাড়াও চুল শুকানোর জন্য তোয়ালে দিয়ে মাথা জোরে জোরে মুছলেও চুলের গোঁড়া ভেঙ্গে যায়।

আমিষের অভাব

চুল পড়ার কারণ গুলোর মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে শরীরে আমিষের অভাব। এখানে আমিষ বলতে আমিষ জাতীয় খাবারকে বুঝানো হয়েছে। যাদের ছোটবেলা থেকেই খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ নেই তাদের ক্ষেত্রে চুল পড়ার বিষয়টি দেখা গেছে। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ না থাকায় ব্লাড সার্কুলেশনের ঘাটতি দেখা দেয় যার কারনে চুলের গোঁড়া নরম হয়ে যায়। যার কারনে চুল খুব দ্রুত ঝরতে শুরু করে।

চুলে সাবান ব্যবহার

অনেকেই আছে যারা কিনা চুলে শ্যাম্পুর পরিবর্তে সাবান ব্যবহার করে থাকে। সাবানে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্ষার থাকে যা চুলেকে আর স্কালকে ড্যামেজ করে দেয় যার কারণে চুল পড়ে যায়। সাবান ব্যবহারের সাথে সাথে শ্যাম্পুর ব্যবহারটাও খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন চলে শ্যাম্পু করা যাবে না। প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুলের সাইন বাড়লেও এটি চুলকে পাতলা করে দেয় চুল মজবুত থাকে না যায় কারণে চুল পড়ে থাকে।

চুল পড়ার ক্ষেত্রে এইসকল কারণ গুলো বেশি দেখা যায়। চুল পড়ার কারণ গুলো তো জানা গেল। এভার কথা হচ্ছে, কিভাবে আমরা চুল পড়া বন্ধ করতে পারি বা নতুন চুল গজানোর জন্য কি করতে পারি? চুল পড়া বন্ধ বা নতুন চুল গজানোর জন্য বেশি চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি চাইলে কয়েকটি কাজের মাধ্যমে খুব সহজেই চুল পড়া বন্ধ করতে পারেন এবং এটি এই কাজ গুলো নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।যেমনঃ

ভিটামিন-এ যুক্ত খাবার

ভিটামিন-এ আমাদের চুলের গোঁড়া বা চুল যেখান থেকে বড় হয় সেটা ঠিক মতো কাজ করতে সাহায্য করে। এটি আমাদের চুলের গোঁড়াকে শক্ত ও চুল দ্রুত বড় করতে কাজ করে। ভিটামিন-এ যুক্ত খাবার হলো হলুদ ও কমলা রঙের ফল এবং সবজি। যেমনঃ আম,কলা,পেঁপে, গাজর ইত্যাদি।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা

ডিহাইডেট্রের কারণে আমাদের মাথার চুল পড়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়ার কারণে শরীরে ডিহাইড্রেট দেখা দেয়। তাই শরীর কখনো ডিহাইড্রেট করা যাবে না। ডিহাইড্রেট চুলের গোঁড়া নরম করে যার কারণে চুল পড়ে যায়। ডিহাইড্রেট যাতে না হয় তার জন্য ওজন অনুযায়ী পানি খেতে হবে। সেটা করতে না পারলে সারাদিনে কমপক্ষে ৮-১২ গ্লাস পানি খেতে হবে।

সামুদ্রিক মাছ(তৈলাক্ত মাছ)

সামুদ্রিক মাছ আমাদের চুল ঘন ও কালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই মাছ গুলোতে প্রোটিনও পাওয়া যায় যা আমাদের চুলের জন্য খুব অপকারী। সামুদ্রিক মাছ হলো টুনা, স্যামন তবে আমাদের দেশের মাছও খেতে পারেন যেমন, ইলিশ, কই,মলা,চাপিলা ইত্যাদি।

ভিটামিন-ডি ট্যাবলেট

আমরা সবাই জানি চুলের জন্য ভিটামিন-ডি কতটা জরুরি। তবে খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে আপনি ভিটামিন-ডি ট্যাবলেট খেতে পারেন তবে অতিরিক্ত ট্যাবলেট খেলে চুলের ক্ষতি হবে। এছাড়াও আপনি ভিটামিন-ডি এর জন্য রোদে চুল শুকাতে পারেন। সুর্যের আলো চুলের জন্য খুবই উপকারী আপনি ভেজা চুল বা অন্য কোনো কাজের মাঝেও চুলে সুর্যের আলো লাগাতে পারেন। প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট রোদে চুল রাখলেই যথেষ্ট।

চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর জন্য আপনি এই কাজ গুলো করতে পারেন। এইসব কাজগুলো মেনে চললে খুব দ্রুত ও সহজেই আপনার চুল পড়া বন্ধ এবং নতুন চুল গজানোর শুরু করবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন